ইরান ও ইজরায়েলের যুদ্ধ ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। ওই দুই দেশে কর্মসূত্রে থাকা ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে 'অপারেশন সিন্ধু' শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারই অঙ্গ হিসেবে রবিবার রাতে ইরান থেকে ২৮৫ জনকে নিয়ে দিল্লি পৌঁছয় একটি বিমান। আর এক দেশ ইজরায়েল থেকেও ১৬২ জন ভারতীয়কে জর্জনে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের শীঘ্রই দিল্লিতে নিয়ে আসা হবে।
'অপারেশন সিন্ধু'-র আওতায় রবিবার রাত পর্যন্ত মোট ১৭১৩ জন ভারতীয়কে নিরাপদে দেশে ফেরানো হয়। তার আগে পর্যন্ত সাতটি বিমানে ইরান থেকে ভারতীয়কে দেশে ফেরানো হয়। অন্যদিকে সোমবার জর্ডন থেকে ২০০-রও বেশি নাগরিক ভারতে ফেরেন।
ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে গত সপ্তাহ থেকেই যুদ্ধের ভয়াবহতা বেড়েছে। তারপরই ভারত সরকার 'অপারেশন সিন্ধু' শুরু করে। ভারতকে এই সিদ্ধান্ত নিতেই হত। কারণ, সেই সময় দুই দেশ একে অপরকে আক্রমণ করছিল। বোমা বর্ষণ করা হচ্ছিল। তার জেরে অনেকের প্রাণও যায়। এই পরিস্থিতিতে সেখানে বসবাকারী ভারতীয়দেরও মৃত্যু হতে পারত। তখন ইরান ও ইজরায়েল থেকে ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেয় মোদী সরকার। এরই মধ্যে রবিবার ইরানের তিন পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালায় আমেরিকা। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে সরাসরি ঢুকে পড়ে তারা। তারপর থেকে বাসিন্দাদের দেশে ফেরাতে আরও তৎপর বিদেশমন্ত্রক।
ইরানের মাশহাদ, আর্মেনিয়ার ইয়েরেভান এবং তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাতে অনেক ভারতীয় বসবাস করেন। সেখান থেকে চার্টার্ড ফ্লাইটের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফেরানো শুরু হয়। গত শুক্রবারই ইরান আকাশসীমার নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে। ফলে মাশহাদ থেকে তিনটি বিমান ভারতে রওনা দেয়।
'অপারেশন সিন্ধু'-র প্রথম বিমান ভারতে পৌঁছয় শুক্রবার রাতে। যাত্রী ছিলেন ২৯০ জন। শনিবার বিকেলে দ্বিতীয় ফ্লাইটটি ৩১০ জন নাগরিককে নিয়ে দেশে আসে। বৃহস্পতিবার আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভান থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটও ভারতে পৌঁছায়। শনিবার সকালে তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাত থেকে আরেকটি ফ্লাইট দিল্লির আইজিআই বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রক নিশ্চিত করেছে, ওই সব দেশে বসবাসকারী কোনও নাগরিককে যাতে বিপদে পড়তে না হয়, সেই বিষয়ে সরকার সজাগ। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। 'অপারেশন সিন্ধু'-র লক্ষ্য প্রতিটি ভারতীয়কে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা।