পাকিস্তানে বিমান হামলার পর ভারতীয় সেনাবাহিনী একটি সংবাদ সম্মেলন করল। এই সংবাদিক সম্মেলনের বিশেষ বিষয় হলো, এতে দুইজন মহিলা কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে ব্রিফ করলেন। পহেলগাঁও হামলার প্রতিশোধ নিতে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে 'অপারেশন সিঁদুর' পরিচালনা করেছে। এই অভিযানের অধীনে, ৯টি জঙ্গি আস্তানা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি বললেন, "পহেলগাঁও হামলা স্পষ্টতই জম্মু ও কাশ্মীরে পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করার জন্য করা হয়েছিল। গত বছর, ২.২৫ কোটিরও বেশি পর্যটক কাশ্মীরে ভ্রমণ করেছিলেন। হামলার পদ্ধতি ছিল জম্মু ও কাশ্মীর এবং দেশের বাকি অংশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উস্কে দেওয়া, কিন্তু ভারত সরকার এবং দেশের নাগরিকরা তা ব্যর্থ করে দিয়েছে।" বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি আরও বলেন, "ভারত সীমান্ত আক্রমণের জবাব দেওয়ার এবং প্রতিরোধ করার অধিকার প্রয়োগ করেছে। ভারতের পদক্ষেপটি ছিল পরিমাপযোগ্য, দায়িত্বশীল এবং অ-উস্কানিমূলক। এটি ছিল সংগঠক এবং অর্থায়নকারীদের জবাব দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা। ভারতের পদক্ষেপকে এই প্রেক্ষাপটে দেখা উচিত।"
কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং প্রেস ব্রিফিংয়ে বিমান হামলা সম্পর্কে তথ্য দেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রেস ব্রিফিংয়ে কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বলেন, "নিরপরাধ পর্যটক এবং তাদের পরিবারকে ন্যায়বিচার দেওয়ার জন্য অপারেশন সিঁদুর শুরু করা হয়েছিল। পাকিস্তান গত তিন দশক ধরে সন্ত্রাসী অবকাঠামো তৈরি করে আসছে, যা পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীর উভয় অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে।" কর্নেল সোফিয়া বলেন, "৯টি জঙ্গি শিবির লক্ষ্যবস্তু করে ধ্বংস করা হয়েছে। গত তিন দশক ধরে, পাকিস্তান পরিকল্পিতভাবে একটি সন্ত্রাসী অবকাঠামো তৈরি করেছে যা সন্ত্রাসী শিবির এবং লঞ্চপ্যাডের জন্য একটি স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। উত্তরে সাওয়াই নালা এবং দক্ষিণে বাহাওয়ালপুরে অবস্থিত বিখ্যাত প্রশিক্ষণ শিবিরগুলিকে এবারের অভিযানে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।"
কর্নেল সোফিয়া কুরেশি আরও বলেন, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার শিকারদের ন্যায়বিচার প্রদানের জন্য অপারেশন সিঁদুর শুরু করা হয়েছিল। এই অভিযানে ৯টি জঙ্গি আস্তানা লক্ষ্য করে ধ্বংস করা হয়েছিল। অপারেশন সিঁদুরের সময়, নিরীহ বঅসামরিক নাগরিকদের যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হয়েছিল। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের ৪ জন সৈন্য নিহত হন। এই ঘটনায় জঙ্গিদের পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অবস্থিত একটি জঙ্গি শিবিরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। সেই শিবির এবার গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মুম্বাই জঙ্গি হামলায় জড়িত জঙ্গি দের আস্তানাগুলিও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। মারকাজ সুবহানাল্লাহ ছিল জইশ-ই-মহাম্মদের সদর দফতর। এখানে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। কোনও সামরিক অবস্থান লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি এবং কোনও বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ব্রিফিংয়ের সময় উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং বলেন, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই অপারেশন সিঁদুর পরিচালিত হয়েছিল। পাকিস্তানের মুজাফফরাবাদে লস্করের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছিল। সন্ত্রাসীরা এখান থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। সন্ত্রাসীদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। বার্নালা ক্যাম্পও ভেঙে ফেলা হয়। শিয়ালকোটের মাহমুনা ক্যাম্পও ধ্বংস হয়ে যায়।
এদিকে কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বলেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী রাত ১টা থেকে ১.৩০ টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে। নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে এই লক্ষ্যবস্তুগুলি নির্বাচন করা হয়েছিল এবং নিরীহ অসামরিক নাগরিকদের যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হয়েছিল। পাকিস্তান যদি কিছু করার সাহস করে, তাহলে তাকে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
কর্নেল সোফিয়া কুরেশি পাকিস্তানের অন্ধকার রহস্য উন্মোচন করেন
সোফিয়া কুরেশি অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কে বলতে দিয়ে পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দেন। বলেন যে পাকিস্তান জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং তাদের জন্য শিবির তৈরি করেছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে কর্নেল সোফিয়া বলেন, পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের হাতে নিহতদের পরিবারকে ন্যায়বিচার প্রদানের জন্য অপারেশন সিন্দুর শুরু করা হয়েছিল। পাকিস্তানের অন্ধকার রহস্য উন্মোচন করে তিনি বলেন যে গত তিন দশক ধরে সন্ত্রাসী পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে যা পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীর উভয় অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে। কর্নেল সোফিয়া বলেন যে ৯টি সন্ত্রাসী শিবির লক্ষ্যবস্তু করে ধ্বংস করা হয়েছে। গত তিন দশক ধরে, পাকিস্তান পরিকল্পিতভাবে এমন একটি সন্ত্রাসী অবকাঠামো তৈরি করেছে যেখানে সন্ত্রাসী শিবির এবং লঞ্চপ্যাড রয়েছে।
উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং বলেন, সন্ত্রাসীদের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে
সংবাদিক সম্মেলনে উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই অপারেশন সিন্দুর পরিচালিত হয়েছিল। তিনি বলেন, মুজাফফরাবাদে লস্কর-ই-তইবার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে ধ্বংস করা হয়েছে যেখানে সন্ত্রাসীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, এই অভিযানের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, শিয়ালকোটের বার্নালা ক্যাম্প এবং মাহমুনা ক্যাম্পও সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছিল।