মঙ্গলবার গভীর রাতে বদলা নিল ভারত। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিল ভারতীয় সেনা। তিন বাহিনীর এই যৌথ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন সিন্দুর। পাকিস্তানে ঢুকে ন'টি সন্ত্রাসবাদী আস্তানা গুঁড়িয়ে দেয় ভারতের সেনাবাহিনী। এর মধ্যে রয়েছে মুরিদকে, যেখানে লস্করের সদর দপ্তর ছিল, যা তৈরি করার জন্য ওসামা বিন লাদেন ১ কোটি টাকা দান করেছিলেন।
লাদেনের অনুদান
লাহোর থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দূরে ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডে অবস্থিত মুরিদকে ছিল লস্কর-ই-তৈয়বার সদর দপ্তর। এর নাম 'মারকাজ-ই-তৈয়বা'। এই কমপ্লেক্সে একটি মসজিদ এবং একটি অতিথিশালা নির্মাণের জন্য লাদেন ১ কোটি টাকা সাহায্য করেছিলেন। ২০০৮ সালের মুম্বই সন্ত্রাসী হামলার সকল অপরাধী এমনকি আজমল কাসাভও প্রশিক্ষণ পেয়েছিল এখানেই। শুধু তাই নয়, মারকাজ সুবহানআল্লাহ ছিল ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যেখানে ৪০ জন সিআরপিএফ সদস্য শহীদ হয়েছিলেন।
মাওলানা মাসুদের উস্কানি
মাওলানা মাসুদ আজহার দুই বছর পর মারকাজ সুবহান আল্লাহ-তে জইশ ক্যাডারদের ভারতের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রতিশোধ নেওয়ার দাবি তোলেন। অনুষ্ঠানে মাওলানা তালহা সাইফ, মহম্মদ আবদুল্লাহ বিন মাসুদ এবং অন্যান্য জৈশ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কাসভদের প্রশিক্ষণ
পাকিস্তানের আইএসআই এখানে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ চলত। জৈশের বাহাওয়ালপুর সদর দপ্তরের মতো এই কমপ্লেক্সটি লস্করের আদর্শ প্রচার, লজিস্টিক এবং অপারেশনাল কেন্দ্র, যেখানে পাকিস্তান এবং কাশ্মীর থেকে শত শত তরুণ-তরুণীদের আনা হয় এবং সন্ত্রাসবাদী অভিযানের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
কী কী ছিল এই ক্যাম্পে?
প্রায় ২০০ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত এই কমপ্লেক্সটিকে বিশ্বের বৃহত্তম সন্ত্রাসবাদী আস্তানাগুলির মধ্যে একটি। এটি ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে আইএসআই এবং বহিরাগত তহবিলের সহায়তায় হাফিজ সাইদ নিরমান করেন। স্যাটেলাইট চিত্রের মাধ্যমে দেখা যায় যে মারকাজ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ একটি জনপদ। এর কেন্দ্রে রয়েছে একটি মসজিদ, যার চারপাশে স্কুল, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং খোলা মাঠ রয়েছে যেখানে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই কমপ্লেক্সে হাসপাতাল, অফিস, ব্যাংক এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক ইউনিটও রয়েছে। ঠিক যেন একটা আধুনিক শহর বানিয়ে রেখেছে সন্ত্রাসবাদীরা।