ডাল লেকের মধ্যে পাওয়া গেল পাকিস্তানের ফতেহ-১ রকেটের অবশিষ্টাংশ। রবিবার ডাল লেক পরিষ্কার করার সময়ে শ্রীনগরের সাফাইকর্মীরা ডাল লেক থেকে রকেটের অবশিষ্টাংশ উদ্ধার করে। মিসাইলের ভাঙা এই টুকরো গত ১০ মে ভারত-পাক সংঘর্ষের সময়ে পড়শি দেশ থেকে ছোড়া রকেটের অংশ বলেই মনে করা হচ্ছে।
মে মাসের সংঘর্ষের সময়ে, ১০ মে ডাল লেকের জলে ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা গিয়েছিল। অনুমান, সংঘর্ষের সময়ে শ্রীনগরের সামরিক ঘাঁটিগুলিকে ধ্বংস করার জন্য টার্গেট করেই ফতেহ-১ মিসাইল ছুড়েছিল পাকিস্তান। যদিও পাক সেনার সেই টার্গেট ব্যর্থ হয়েছিল। ভারতীয় বায়ুসেনা ফতেহ-১ মিসাইল আকাশেই ধ্বংস করে দেয়। তারই কোনও অবশিষ্ট অংশ ডাল লেকের জলে এসে পড়ে বলে অনুমান। দীর্ঘদিন বাদে সেই অংশ উদ্ধার হয় ডাল লেক পরিষ্কার করতে গিয়ে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের ফতেহ একটি গাইডেড আর্টিলারি রকেট সিস্টেম, যার ১ এবং ২ দু'টি সংস্করণ রয়েছে। ফতেহ-১ ১৪০ কিলোমিটার পাল্লার রকেট সিস্টেম এবং ফতেহ-২ এর আপগ্রেডেড ভার্সন। যার পাল্লা ২৫০-৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রথম ফতেহ-১ পরীক্ষা করে। পরবর্তীতে এর আপগ্রেডেড ভার্সনটিও ব্যবহার করা হয়। ফতেহ-১ গাইডেড মিসাইল বেশ আধুনিক অস্ত্র। এতে এভিওনিক্স এবং ইনর্শিয়াল স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম আছে। নির্ভুলভাবে বহুদূরের টার্গেটে আঘাত হানতে সক্ষম। ৯ এবং ১০ মে জম্মু, সাম্বা, রাজৌরি, পাঠানকোট, অমৃতসর, জয়সলমের, বারমের এবং পোখরানে একাধিক ড্রোন দেখা যায়। একইসঙ্গে, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কুপওয়ারা, পুঞ্চ, উরি, নওগাম এবং হান্দওয়ারায় ভারী গোলাগুলির লড়াইয়েরও খবর পাওয়া গিয়েছিল। সে সময়েই ওই সমস্ত এলাকায় সামরিক ঘাঁটি টার্গেট করে পাকিস্তান ফতেহ মিসাইল ছু়ড়েছিল। ভারত তা মাঝ আকাশেই প্রতিহত করে।
সেই মিসাইলের অংশই গত ১০ মে ডাল লেকের জলে পড়েছিল বলে খবর। সেদিন ডাল লেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা গিয়েছিল। লেকের আশপাশে বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া গিয়েছিল। তবে কোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি।
রবিবার সাফাই অভিযানের সময়ে ডাল লেক থেকে এই মিসাইলের অবশিষ্টাংশ উদ্ধার করেন সাফাই কর্মীরা। ভাঙা টুকরোটি জল থেকে তুলে আনার পর বোঝা যায় সেটি মিসাইলের অংশ। স্থানীয় পুলিশের হাতে সেই টুকরো তুলে দেওয়া হয়। সেটি অপারেশন সিঁদুরের সময়ে পাকিস্তানের তরফে করা হামলার চিহ্ন বলেই উল্লেখ করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, কাশ্মীরের পর্যটন ব্যবসার মধ্যমণি এই ডাল লেক। এই লেকে শিকারায় ঘোরেন পর্যটকরা। সেখানে এই ধরনের মিসাইলের অংশ পাওয়া আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে চতুর্দিকে। পহেলগাঁও হামলার ভয়াবহতা কাটিয়ে ধীরে ধীরে পর্যটন ব্যবসা ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে কাশ্মীরে। সেখানে আচমকা ডাল লেকের মতো জনপ্রিয় এলাকায় মিসাইলের অংশ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ, পর্যটকদের সুরক্ষা নিয়ে।