
হরিয়ানার পানিপথের 'কিলার চাচি' আর-পাঁচটা মহিলার মতোই একবারে সাধারণ। দেখে কিচ্ছুটি বোঝার উপায় নেই। তবে তার মানসিকতা ঠিক ততটাই ভয়ঙ্কর। পুনম নামের এই মহিলা বাচ্চাদের সঙ্গে হাসত-খেলত। আর সেই নাকি নিত তাদের প্রাণ।
সুন্দর বাচ্চাদের দেখেই জ্বলত পুনম। তার চোখে-মুখে রাগ দেখা যেত। সে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশকে জানায়, নিজের বা তার মেয়ের থেকে সুন্দর বাচ্চাদের একদমই সহ্য করতে পারত না।
আর এই অদ্ভুত মহিলা প্রথম খুনটি করে ২০২৩ সালে। সোনিপতের বোহার গ্রামে ননদের ছোট মেয়ে খেলতে খেলতে তার পাশে আসে। তারপর পুনম সেই মেয়েটিকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে বাথরুমে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে জলের মধ্যে ডুবিয়ে দেয়। কাজ শেষ হতেই পুনম বাইরে থেকে বাথরুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। পরিবার মনে করে, কোনও দুর্ঘটনাতেই মারা গিয়েছে বাচ্চাটি। ফলে তারা আর বেশি কিছু করেনি।
অবশ্য পুনমের মাথাতে এই খুন নিয়ে ভয়ও ছিল। সে ভাবত যদি কেউ তার কীর্তি জানতে পেরে যায়? তাই সে নিজের ৩ বছরের ছেলেকেও ওই একই কায়দায় মেরে ফেলে। এরপর পুনম খুব কাঁদে, চিৎকার করে, যাতে কেউ তাকে সন্দেহ না করে।
ডুবিয়ে মেরে ফেলত
এরপর ২০২৫ সালে নিজের বাপেরবাড়িতে থাকার সময় একই কাজ করে পুনম। এ বার তার শিকার হয় ভাইয়ের মেয়ে। সেই বাচ্চাটির সৌন্দর্য পছন্দ হয়নি পুনমের। তাই সে নিজের পুরনো ঢঙেই বাচ্চাটাকে মেরে ফেলে। তিনটি খুনের পরও কারও সন্দেহ হয়নি পুনমের দিকে।
কিন্তু ১ ডিসেম্বর, ২০২৫ সালে পানিপথের নোলথা গ্রামে একটি বিয়ের অনষ্ঠানেই পর্দা ফাঁস হয়ে যায় এই সিরিয়াল কিলারের। ৬ সালের এক মেয়েকে টাবের মধ্যে খেলতে নিয়ে যাওয়ার বাহনা করে। যেই সেই বাচ্চাটি টাবে বসে, তখনই তার মাথা জলে চেপে ধরে পুনম।
যদিও এই বার পুনমের সঙ্গ দেয়নি ভাগ্য। টাব ছিল মাত্র ১ ফুটের। আর সেই বাচ্চাটি তার থেকে লম্বা ছিল। এই কারণে বাচ্চার মাথা ডুবিয়ে রাখা সম্ভব হলেও পা ছিল বাইরে। এই কারণে সন্দেহ যায় তার দিকে।
প্রতিটি মৃত্যুর পরই আনন্দ করত
অদ্ভুত বিষয় হল, হত্যা করার পর খুব খুশি হতো পুনম। আনন্দ করত। এই কথাতেই পরিষ্কার, তার অন্তরে শুধু হিংসা, খুন করার মানসিকতা ছিল। অবশ্য তাকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পানিপথের পুলিশ। তারা দেখছে, আরও কোনও বাচ্চার হত্যা করেনি তো এই সিরিয়াল কিলার।