পেগাসাস গুপ্তচরবৃত্তি মামলায় (Pegasus Case) গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞ কমিটি পেগাসাস গুপ্তচরবৃত্তি মামলার তদন্ত করবে। এই নিয়ে আদালতে দায়ের করা আবেদনে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছিল। প্রধান বিচারপতি এনভি রমন্না, বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালত বলেছে, অযৌক্তিক গুপ্তচরবৃত্তি মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সুপ্রিম কোর্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আরভি রবীন্দ্রনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছে। বিচারপতি রবীন্দ্রনের সাথে অলোক যোশী এবং সন্দীপ ওবেরয় এই কমিটির অংশ থাকবেন। বিশেষজ্ঞ কমিটিতে সাইবার সিকিউরিটি, ফরেনসিক এক্সপার্ট, আইটি ও কারিগরি বিশেষজ্ঞরাও থাকবেন।
গোপনীয়তা লঙ্ঘনের তদন্ত করতে হবে - সুপ্রিম কোর্ট
শীর্ষ আদালত বলেছে, এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও স্পষ্ট অবস্থান নেই। গোপনীয়তা লঙ্ঘনের তদন্ত হওয়া উচিত। আদালত সূত্রে খবর, বুধবারের শুনানিতে কেন্দ্রকে তীব্র ভর্ৎসনা করা হয়। কেন্দ্রের জবাব সন্তোষজনক নয় বলে জানান বিচারপতিদের ডিভিশন বেঞ্চ।
বেঞ্চ, ১৩ সেপ্টেম্বর এই বিষয়ে তার রায় সংরক্ষণ করার সময় বলেছিল যে , তারা শুধুমাত্র জানতে চায় যে কেন্দ্র বেআইনিভাবে নাগরিকদের গুপ্তচরবৃত্তির জন্য পেগাসাস সফ্টওয়্যার ব্যবহার করেছে কি না।
আদালত বলেছে যে গুপ্তচরবৃত্তি মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নজরদারি হিসাবে প্রেসের ভূমিকাকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এতে বলা হয়, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সংস্থাগুলোর সংগৃহীত তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু গোপনীয়তার অধিকারে তখনই হস্তক্ষেপ করা যেতে পারে যখন এটি জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য একেবারে প্রয়োজনীয়।
পেগাসাস মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য
কেন্দ্র বক্তব্য ছিল যে এটি জনসাধারণের আলোচনার বিষয় নয় বা এটি "জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে" নয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে পেগাসাস গুপ্তচরবৃত্তি মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১৫ টি পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। এই পিটিশনগুলি সিনিয়র সাংবাদিক এন রাম, সাংসদ জন ব্রিটাস এবং যশবন্ত সিনহা সহ একাধিক ব্যক্তি দায়ের করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক মিডিয়া গ্রুপগুলি জানিয়েছে যে প্রায় ৩০০টি প্রমাণিত ভারতীয় ফোন নম্বর রয়েছে যেগুলি পেগাসাস সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে গুপ্তচরবৃত্তির সম্ভাব্য লক্ষ্য ছিল।
স্বাভাবিক ভাবেই এদিন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ট্যুইট করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন।
পেগাসাস ইস্যুতে এর আগে উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। পেগাসাস সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ উঠেছিল। তবে পেগাসাস ইস্যুতে কোনও কমিটি গঠন করতে রাজি হয়নি কেন্দ্র। এর মাঝেই পেগাসাস কাণ্ডে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়।