পুরুষের অণ্ডকোষে মিলল বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক পদার্থ। এটি এমন এক পদার্থ যার কোনও শেষ নেই। একে ধ্বংসও করা যায় না। মানুষের ভ্রুণ, পাথর, শিরা, নীল তিমি, শিশুদের মল, মাউন্ট এভারেস্টে এবং সমুদ্রের তলদেশ- সর্বত্র পাওয়া যায় এই পদার্থ। বুঝতেই পারছেন। কীসের কথা বলা হচ্ছে। হ্যাঁ প্লাস্টিক। আর তা এবার পাওয়া গেল মানুষের অণ্ডকোষে। নতুন এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা কুকুর এবং মানুষের অণ্ডকোষের টিস্যু পরীক্ষা করেছেন। যার ভিতরে মাইক্রোপ্লাস্টিক মিলেছে। মাইক্রোপ্লাস্টিক আসলে খুব ছোট প্লাস্টিকের কণা। কুকুরের তুলনায় মানুষের অণ্ডকোষে তিনগুণ বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
কুকুরের অণ্ডকোষের প্রতি গ্রাম টিস্যুতে প্লাস্টিক পাওয়া গেছে ১২২.৬৩ মাইক্রোগ্রাম। আর মানুষের অণ্ডকোষে সেই প্লাস্টিকের পরিমাণ ছিল ৩২৯.৪৪ মাইক্রোগ্রাম। যা দেখে রীতিমতো স্তম্ভিত চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে, প্লাস্টিকের দূষণ এই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তার দূষণের প্রভাব সরাসরি মানুষের শরীরেও পড়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের কারণে পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
যিনি এই গবেষণাটি করেছেন তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করেছিলেন অণ্ডকোষে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাবে। তবে এর পরিমাণ যে এত বেশি হবে তা কল্পনাও করতে পারেননি। তাঁর মতে, এভাবে প্লাস্টিক দূষণ বাড়তে থাকলে মানুষের প্রজনন ক্ষমতা ক্রমশ প্রভাবিত হবে। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বড়সড় সমস্যা তৈরি করতে পারে এই প্লাস্টিক। সেই বিজ্ঞানী আরও জানান, প্রথমে কুকুরের অণ্ডকোষ পরীক্ষা করে দেখা যায় সেখানে প্লাস্টিক রয়েছে। তবে মানুষের অণ্ডকোষ পরীক্ষার পর চমকে ওঠার মতো তথ্য মেলে। মানুষের শরীরে কুকুরের তুলনায় ৩ গুণ বেশি প্লাস্টিক মেলে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, কুকুর ও মানুষের অণ্ডকোষে ১২ ধরনের প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। এতে সর্বাধিক পরিমাণে রয়েছে পলিথিন। এই পলিথিন থেকেই প্লাস্টিকের ব্যাগ ও প্লাস্টিকের বোতল তৈরি করা হয়। এগুলোই সবথেকে বেশি প্লাস্টিক দূষণ ঘটায়।
বিজ্ঞানীরা জানান, এই প্লাস্টিকের কারণেই হয়তো মানুষের স্পার্ম কাউন্ট দ্রুত হারে কমছে। যদিও কুকুরের স্পার্ম কাউন্ট পরীক্ষা করা হয়নি। কুকুরের শুক্রাণুতে পলিভিনাইল ক্লোরাইড (পিভিসি) প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গেছে। এটি প্লাস্টিকের একটি রূপ। এই গবেষণাটি সম্প্রতি টক্সিকোলজিক্যাল সায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে।