ইজরায়েলের আছে আয়রন ডোম। আমেরিকার ‘গোল্ডেন ডোম’। আর এবার ভারতকে আগলে রাখবে 'সুদর্শন চক্র'। একেবারে নতুন, অত্যাধুনিক ডিফেন্স সিস্টেমের ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, এই সিস্টেমের মাধ্যমে আকাশপথে শত্রুপক্ষের যে কোনও হামলা রুখে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে পাল্টা হামলা দিতেও সক্ষম এই সুদর্শন চক্র। ভারতের এই নতুন সিস্টেম ঠিক কতটা শক্তিশালী? এর তাৎপর্যই বা কী? আসুন সহজ ভাষায় জেনে নেওয়া যাক।
‘সুদর্শন চক্র’ কী?
ডিআরডিও (DRDO) এবং ইসরো (ISRO) যৌথভাবে এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি করেছে। বিষ্ণুর সুদর্শন চক্রের অনুসরণে এর নামকরণ করা হয়েছে। এর পিছনে উদ্দেশ্য একটাই, শত্রুপক্ষের হামলা মাঝ আকাশেই আটকে দেওয়া। সম্প্রতি অপারেশন সিঁদুরের সময় পাকিস্তানের হামলার চেষ্টাও ঠিক একইভাবে রুখে দিয়েছিল ভারত। এবার একেবারে ভারতীয়, অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি করার লক্ষ্য স্থির করেছে DRDO।
এর ক্ষমতা শুনলে চমকে যাবেন
রেঞ্জ: শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র ২,৫০০ কিলোমিটার দূরে থেকেই ধ্বংস করতে সক্ষম।
উচ্চতা: আকাশে ১৫০ কিলোমিটার উঁচুতেও টার্গেটে গিয়ে আঘাত হানবে।
প্রযুক্তি: আধুনিক আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) এবং লেজার গাইডেড সিস্টেম আছে। মাঝ আকাশে চলন্ত মিসাইলকে ধাওয়া করে তাতে আঘাত হানতে সক্ষম।
গতি: প্রতি সেকেন্ডে ৫ কিমি বেগের মিসাইল।
শুধু মাটিতেই নয়, মহাকাশ থেকেও: বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি একটি হাইব্রিড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বলা যেতে পারে। স্যাটেলাইট ও রাডার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কড়া নজরদারি রাখা হবে। একটি মাছিও সেই নজর এড়িয়ে গলতে পারবে না।
টার্গেট: ব্যালিস্টিক মিসাইল, ক্রুজ মিসাইল, হাইপারসোনিক অস্ত্র ধ্বংস করার ক্ষমতা আছে।
খুব শীঘ্রই তৈরি হয়ে যাবে: ২০২৬ সালের মধ্যেই এই সিস্টেম সম্পূর্ণরূপে মোতায়েন হয়ে যাবে বলে জানাচ্ছে DRDO ও ISRO।
খরচ: আনুমানিক ৫০,০০০ কোটি টাকা।
ট্রাম্পের ‘গোল্ডেন ডোম’ কী?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একটি নতুন এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম লঞ্চ করেছিলেন। তার পোশাকি নাম দেন ‘গোল্ডেন ডোম’। সেটাও এই ধরনেরই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। ২০২৩ সালেই আংশিকভাবে এই ডিফেন্স সিস্টেম অ্যাকটিভেট করেছে আমেরিকা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমেরিকার গোল্ডেন ডোমের তুলনায় ‘সুদর্শন চক্র’ কিছুটা হলেও এগিয়ে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল AI এবং স্যাটেলাইট সাপোর্ট সিস্টেম। ‘গোল্ডেন ডোম’ তুলনামূলকভাবে পুরনো প্রযুক্তির ওপরই নির্ভরশীল। খরচের দিক থেকেও ভারতের এই প্রকল্প অনেক কম ব্য়য়বহুল।
পাকিস্তান, চিন সীমান্ত উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিস্টেম যে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অনেক বেশি মজবুত করবে, তা বলাই বাহুল্য। তাছাড়া সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হওয়ায় বিদেশি অস্ত্র আমদানির উপর নির্ভরশীলতাও কমবে।