পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাক সম্পর্কের তিক্ততা চরম পর্যায়ে। সীমান্তে সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করছে পাক সেনা। গোলা-গুলি চলছে। ২২ এপ্রিলের সেই রক্তাক্ত দিনে যে নৃশংসতা ঘটেছে, তা শুধু জম্মু-কাশ্মীর নয়, গোটা দেশের মনে ক্ষোভ আর যন্ত্রণার আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এবার বদলার পালা। দেশের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবনা শুরু করেছে মোদী সরকার। এবার কড়া সিদ্ধান্তের পথে হাঁটতে চলেছে দিল্লি।
সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার একদিনে একের পর এক চারটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লক্ষ্য একটাই—পহেলগাঁওয়ের দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত জবাব দেওয়া।
সকাল ১১টা: সুরক্ষা নিয়ে প্রথম বৈঠক
আজ সকাল ১১টায় শুরু হবে 'ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি' বা CCS-এর বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী নিজে এর নেতৃত্বে থাকবেন। এই বৈঠকে সেনা, গোয়েন্দা বিভাগ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকেরা উপস্থিত থাকবেন বলে খবর। পহেলগাঁও হামলার পরে এটি দ্বিতীয়বার CCS বৈঠক হতে চলেছে, যা থেকেই বোঝা যায় এই ইস্যুটিকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে কেন্দ্র।
পরপর বৈঠক: পলিটিক্যাল ও ইকনমিক ফ্রন্টেও আলোচনা
প্রথম বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে হবে 'Cabinet Committee on Political Affairs' (CCPA)-এর বৈঠক। এই কমিটিতে থাকবেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গডকড়ি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নাড্ডা, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ সহ আরও অনেকে।
এরপর তৃতীয় বৈঠক 'Cabinet Committee on Economic Affairs' (CCEA)। এখানে আর্থিক দিক থেকেও প্রতিক্রিয়া কীভাবে সাজানো হবে, তার রূপরেখা তৈরি হবে। চতুর্থ এবং দিনের শেষ বৈঠক হবে মন্ত্রিসভার সম্পূর্ণ অধিবেশনে। পহেলগাঁও হামলার পর এই প্রথমবার সম্পূর্ণ ক্যাবিনেট বৈঠক হতে চলেছে, যেটা থেকে স্পষ্ট—সিদ্ধান্ত হতে পারে বড় কিছু।
বৈঠকের অ্যাজেন্ডা কী?
সূত্রের খবর, এই বৈঠকগুলিতে কেবল প্রতিরক্ষা নয়, কূটনীতি ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও শক্তিশালী পদক্ষেপের ব্লুপ্রিন্ট তৈরি হবে। পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা সিন্ধু জল চুক্তি নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। ভবিষ্যতে পাকিস্তানের উপর জলনীতি নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়ানো হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী
সোমবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দেখা করেন। তিনি সেনাপ্রধানের কাছ থেকে সরাসরি পহেলগাঁও হামলার পরিস্থিতি জেনে তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। যদিও এই বৈঠকের বিস্তারিত তথ্য গোপন রাখা হয়েছে, তবে রাজনৈতিক মহলের ধারণা—এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই বুধবারের বৈঠকগুলির দিকনির্দেশ ঠিক হবে।