প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতা করতে গিয়ে শাস্তি পেয়েছেন লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। তাঁকে এই পুরো অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে। এই যে সাসপেন্ডের সিদ্ধান্ত এটা অধীর চৌধুরীর এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপির একটা সাংঘাতিক আক্রমণাত্মক রণকৌশল নাকি এটার মধ্যে রয়েছে আরো অনেক বড় রাজনীতি !
তার কারণ হল অধীর চৌধুরীকে আক্রমণ করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাতে কিন্তু অধীর চৌধুরীর গুরুত্বটা অনেক বেড়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিনি পোড় খাওয়া রাজনৈতিক নেতা। তিনি জানেন যে তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে অধীর বাবু- অধীর বাবু করে আক্রমণ করলে তাতে কিন্তু রাজনৈতিক গুরুত্বটা অধীর চৌধুরীর বেড়ে যায়।তিনি এটাও বলেছেন যে অধীর বাবু আপনার জন্য আমার সহানুভূতি রয়েছে এবং এটা মনে হয়েছে আমার যে আপনাকে কেন একটা বক্তার তালিকায় পর্যন্ত রাখা হলো না , কেন আপনি এই গুরুত্বটা পেলেন না , এটা কি পশ্চিমবঙ্গ থেকে কোনও রকম ফোন এসেছিল সেই কারনে? অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের সম্পর্ক। সেই জন্য এই রাজ্যে মমতা বিরোধীতায় অসুবিধা হচ্ছে। তার জন্য কি কংগ্রেস হাই কমান্ড থেকে কম গুরুত্ব দিচ্ছে ? এই সমস্ত নানান রকম সম্ভাব্য প্রশ্নকে উনি উসকে দিয়েছেন।
অধীর চৌধুরীকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তার কারণ বিধানসভা নির্বাচন যেগুলো আসছে রাজস্থান , মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্রিশগড় সেখানেও কিন্তু বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ এখন হল কংগ্রেস , অন্য কোনও আঞ্চলিক দল নয় । সুতরাং কংগ্রেসকেই মূলত নিশানা করেছেন নরেন্দ্র মোদী তাঁর বক্তৃতায়। রাহুল গান্ধী সম্পর্কেও তাঁর বক্তৃতায় মোদী রাহুল গান্ধীর মানসিক বিকাশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সুতরাং একটা বিষয় খুব স্পষ্ট যে, যদি মূল আক্রমণ কংগ্রেসকে করা হয় সেটা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জন্য। দ্বিতীয়ত , অন্য আঞ্চলিক দলগুলোর সাথেও কিন্তু কংগ্রেসকে একটা লড়িয়ে দেওয়া অর্থাৎ এটা একটা 'ডিভাইড অ্যান্ড রুল' রণকৌশল। যেটাকে আমরা বলতাম নারদ - নারদ রাজনীতি। অর্থাৎ এটা খুব সাফল্যের সঙ্গে বিজেপি করছে।
মূল প্রশ্ন হচ্ছে তেলেঙ্গানায় কংগ্রেসের প্রধান প্রতিপক্ষটা কে বিজেপি না কংগ্রেস ? আজকে জগন মোহন এবং চন্দ্রবাবু নাইডু দুজনেই এনডিএ-এর শরিক হতে চাইছেন। তাহলে মূল লড়াইটা কার সঙ্গে ? এখানে কংগ্রেসের ভূমিকাটা তাহলে কি হবে ? এইসব প্রশ্নগুলো এসে যাচ্ছে। দূরত্ব বাড়ানোর জন্য তিনি কিন্তু দেখিয়েছেন কংগ্রেস কিন্তু লোহিয়াকে সমর্থন দেয়নি।বরং বিজেপি তাদেরকে গুরুত্ব দিয়েছে। শুধু কংগ্রেসকে নয় গান্ধী পরিবারকে আক্রমণ করা এটা হচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর একটা অসাধারণ রনকৌশল । যেটা বাজপেয়ি , আদবানির সময় থেকেই বিজেপি করছে। কিন্তু এখন সেটা আরো উচ্চকিত। ৩০৩ সংখ্যায় পৌঁছে যাওয়া বিজেপির আক্রমণ। সুতরাং অধীর চৌধুরী এখানে কিন্তু হচ্ছে নৈবেদ্যের নারদ। আসল রণকৌশলটা কিন্তু অনেক গভীরে।