Advertisement

Brics Summit 2024: একপাশে ভারত-একপাশে চিন, মাঝে রাশিয়া, যে ছবি VIRAL, BRICS-এ কী প্রাপ্তি?

Brics Summit 2024: রাশিয়ায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিয়ে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কৌশলগত দিক থেকে তাঁর এই সফরটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের অনেক ফ্রন্টে যুদ্ধ চলছে, তার মধ্যেই কাজান শহরে ব্রিকস সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ছাড়াও অনেক রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

একপাশে ভারত-একপাশে চিন, মাঝে রাশিয়া, যে ছবি VIRAL, BRICS-এ কী প্রাপ্তি?
Aajtak Bangla
  • নতুন দিল্লি,
  • 24 Oct 2024,
  • अपडेटेड 10:26 AM IST
  • রাশিয়ায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিয়ে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
  • কৌশলগত দিক থেকে তাঁর এই সফরটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ

Brics Summit 2024: রাশিয়ায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিয়ে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কৌশলগত দিক থেকে তাঁর এই সফরটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের অনেক ফ্রন্টে যুদ্ধ চলছে, তার মধ্যেই কাজান শহরে ব্রিকস সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ছাড়াও অনেক রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কেন্দ্রবিন্দু ছিল মোদী ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। এমতাবস্থায় এই শীর্ষ সম্মেলন থেকে ভারত কী অর্জন করতে পেরেছে, তা দেখার দরকার আছে।

ভারতে ফিরে এসে প্রধানমন্ত্রী মোদী ব্রিকস সফরকে একটি দুর্দান্ত সাফল্য বলে অভিহিত করেছেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন, তাঁর সরকার এবং রাশিয়ার জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন সকল সদস্য দেশের জন্য ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এসেছে, যা যুদ্ধের এই পরিবেশে খুবই প্রয়োজনীয়। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই পুরো সফরের সবচেয়ে বড় 'প্রাপ্তি' ছিল চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তাঁর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। ২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পরে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে চলে গিয়েছিল। কিন্তু এই শীর্ষ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ভারত ও চিনের সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করল বলে অনেকেই মনে করছেন। বুধবার কাজান শহরে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। প্রায় ৫০ মিনিট ধরে চলে এই বৈঠক। দুই নেতাই এলএসি-তে সামরিক অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে সমঝোতার বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থান নেন। এই সময়, উভয় নেতাই এলএসি থেকে সেনা প্রত্যাহার এবং ২০২০ সালে শুরু হওয়া বিরোধ মেটানোর চুক্তিকে স্বাগত জানান।

ডিনার টেবিলে প্রধানমন্ত্রী মোদী, পুতিন এবং শি জিনপিংয়ের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। নৈশভোজের সময় পুতিনের পাশে বসে থাকতে দেখা যায় মোদী ও জিনপিংকে। বিশ্বের তিন শক্তিশালী দেশ ভারত, রাশিয়া ও চিনের শীর্ষ নেতাদের এই হাসিমাখা ছবি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ আমেরিকার দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তাঁরা মনে করছেন, আমেরিকাকে একাধারে বার্তাও দিলেন পুতিন। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এমনিতেই চাপে রয়েছেন পুতিন। বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে রাশিয়ার ওপরে। সেক্ষেত্রে এই ছবি আমেরিকার অস্বস্থি বাড়াতে পারে। 

Advertisement

যুদ্ধের সময়ে শান্তির জন্য আবেদন

প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারত ও চিনের মধ্যে বিরোধ এবং মতপার্থক্য সঠিকভাবে সমাধানের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন যে কোনও অবস্থাতেই শান্তিকে বিঘ্নিত হতে দেওয়া উচিত নয়। ব্রিকস সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে এই দলটি যুদ্ধ নয়, সংলাপ এবং কূটনীতিকে সমর্থন করে। তিনি এই প্লাটফর্ম থেকে সন্ত্রাসবাদ ও সন্ত্রাসবাদে অর্থ দেওয়ার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, আমরা যুদ্ধ নয়, সংলাপ ও কূটনীতিকে সমর্থন করি। আমরা যেভাবে একসঙ্গে কোভিডের মতো মহামারীর মুখোমুখি হয়েছি, ঠিক একইভাবে আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য আরও নিরাপদ এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করব।

প্রধানমন্ত্রী মোদী আবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতের অবস্থান পরিষ্কার করে দিয়েছেন। তিনি পুতিনকে বলেছেন যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়া উচিত এবং ভারত এর জন্য সম্ভাব্য সব উপায়ে সাহায্য করতে প্রস্তুত। মোদী বলেন,'রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের বিষয়ে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। আমরা বিশ্বাস করি যে সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়া উচিত। আমরা শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠাকে পূর্ণ সমর্থন করি। ভারত সর্বদা মানবতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার চেষ্টা করে এবং ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানের জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।'

ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সঙ্গে বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গেও দেখা করেন। এই বৈঠকে দুই নেতা পশ্চিম এশিয়ায় শান্তির প্রয়োজনীয়তা এবং ভারতের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানকে ভারত সফরে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান। দুই নেতা চাবাহার বন্দর এবং আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহন করিডর (আইএনএসটিসি) সহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করা নিয়েও আলোচনা করেছেন।

গ্লোবাল সাউথের উদ্বেগ

প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস সম্মেলনে গ্লোবাল সাউথের উদ্বেগের বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি ভারতে আয়োজিত G-20 ভয়েস অফ দ্য গ্লোবাল সাউথ শীর্ষ সম্মেলনের কথা স্মরণ করেন এবং বলেন যে ব্রিকসের উচিত গ্লোবাল সাউথের উদ্বেগকে অগ্রাধিকার দেওয়া। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন যে বিশ্বের দক্ষিণের দেশগুলির আশা, আকাঙ্ক্ষা এবং প্রত্যাশাগুলি বোঝা দরকার। গ্লোবাল সাউথ শব্দটি প্রথম ষাটের দশকে ব্যবহৃত হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে, এই শব্দটি ল্যাটিন আমেরিকা, এশিয়া, আফ্রিকা এবং ওশেনিয়া অঞ্চলকে বোঝায়। কিন্তু ধীরে ধীরে এটি উন্নয়নশীল ও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য ব্যবহৃত হতে শুরু করে।

ভারত এবং UAE-এর মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বের পর্যালোচনা

ব্রিকস সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতি শেখ মহম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা বিভিন্ন বৈশ্বিক বিষয়ে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বলেছে যে দুই নেতা দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন। তাঁরা পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন। তাঁরা শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে সব রকমের চেষ্টা করতে সম্মত হয়েছেন।

ভারত ও মিশরের মধ্যে অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা

কাজানে প্রধানমন্ত্রী মোদী মিশরের রাষ্ট্রপতি আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গেও দেখা করেছেন। এই সময় প্রধানমন্ত্রী মিশরের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করেন। উভয় পক্ষই এই অংশীদারিত্ব আরও সম্প্রসারণ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন।

Advertisement

ব্রিকসের ভবিষ্যৎ কী হবে?

কাজানে তিন দিনের ব্রিকস সম্মেলন ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ভারত ব্রিকসকে বৈশ্বিক ভারসাম্য, বৈচিত্র্য এবং বহুত্বের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে। ব্রিকস সদস্য দেশগুলির অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নই এর ভিত্তি। এই সংস্থাটি আগামীদিনে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করার দিকে মনোনিবেশ করবে। নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, ব্রিকস ইন্টারব্যাঙ্ক কো-অপারেশন মেকানিজম, ব্রিকস বিজনেস কাউন্সিল এবং ব্রিকস উইমেন বিজনেস অ্যালায়েন্স এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (NDB) সাধারণত BRICS ব্যাঙ্ক নামে পরিচিত। এটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের বিকল্প হিসাবে ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ব্রিকস সংস্থা আগামী কয়েক বছরে ব্রিকস ব্যাঙ্ককে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করবে। এ জন্য ব্রিকস মুদ্রা অনুমোদনের জন্য আলোচনা চলছে।

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement