অধিকৃত কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফের তিরস্কৃত হল পাকিস্তান। রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তি বৈঠকে ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিল, কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে। পাশাপাশি, পাক অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) ভারতীয় ভূখণ্ডের অংশ এবং তা পাকিস্তানকে ছাড়তেই হবে। রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি পার্ভাথানেনি হরিশ (Parvathaneni Harish) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া সুরে বলেন, “পাকিস্তান বছরের পর বছর ধরে জম্মু ও কাশ্মীরের একটি অংশ অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। তাদের জেনে রাখা উচিত, ওই এলাকা একদিন ফিরতেই হবে।”
মোদীর সাক্ষাৎকারের পর ফের উসকে কাশ্মীর বিতর্ক
সম্প্রতি মার্কিন পডকাস্টার প্যাট্রিক বেট-ডেভিডের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তান এবং অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে মন্তব্য করেন। এরপর থেকেই বিশ্ব মঞ্চে কাশ্মীর ইস্যু ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তি বৈঠকে এদিন ভারতের প্রতিনিধি পাকিস্তানকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “পাকিস্তান বারবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের মঞ্চে কাশ্মীর নিয়ে ভিত্তিহীন মন্তব্য করছে। তাদের প্রতিটি দাবি অবৈধ।”
অমিত শাহের হুঁশিয়ারি
রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের কড়া অবস্থানের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্স-এ (আগের টুইটার) পোস্ট করে জানান, “কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদ ইতিহাস হয়ে গেছে। মোদী সরকারের ঐক্যবদ্ধ নীতি বিচ্ছিন্নতাবাদকে উপত্যকা থেকে চিরতরে মুছে দিয়েছে।” তিনি আরও লেখেন, “হুরিয়ত-সহ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি এখন মূল স্রোতে ফিরে আসছে। আমি ভারতের ঐক্যকে শক্তিশালী করার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই এবং সমস্ত গোষ্ঠীকে বিচ্ছিন্নতাবাদ ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানাই।”
পাক সীমান্তে সন্ত্রাস নিয়ে ভারতের অভিযোগ
রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতীয় প্রতিনিধি আরও অভিযোগ করেন, “পাকিস্তান সীমান্তে সন্ত্রাসকে মদত দিচ্ছে এবং তা দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা।” গত সপ্তাহেই রাইসিনা সংলাপে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে কড়া বার্তা দেন। তারপর বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “বিশ্ব ভাল করেই জানে, পাকিস্তান কীভাবে সীমান্তে সন্ত্রাস ছড়ায় এবং তাতে মদত দেয়। তাদের উচিত অবৈধভাবে দখল করা ভারতীয় ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়া।”
আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের অবস্থান
বিশ্লেষকদের মতে, মোদীর সাক্ষাৎকারের পর রাষ্ট্রসঙ্ঘের বৈঠকে কাশ্মীর নিয়ে ভারতের এই শক্তিশালী অবস্থান পাকিস্তানের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াবে। পাকিস্তানের বেআইনি দখলদারি ও সীমান্তে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ভারতের এই জোরালো বার্তা আন্তর্জাতিক মহলে আরও গুরুত্ব পাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।