কর্নাটকের কংগ্রেস নেতা রমেশ কুমারের ধর্ষণ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে উত্তাল গোটা দেশ। তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার পক্ষে সওয়াল করছেন অনেকেই। চাপের মুখে পড়ে ইতিমধ্যেই সেই নেতা ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন। তবে বিতর্ক থামছে না।
অনেকেই বলছেন, ওই কংগ্রেস নেতা ক্ষমা চেয়েছেন ঠিকই। তবে তিনি প্রথম নন। রাজনীতিবিদরা এর আগেও ধর্ষণ নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। যার মাধ্যমে নারীদের অসম্মান করা হয়েছে। সাময়িকভাবে নেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে ঠিকই তবে তারপর সব চাপা পড়ে গিয়েছে। সেই কারণেই এখনও নেতারা ধর্ষণ, নারীদের নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করতে পারেন।
এই প্রতিবেদনে আপনাদের আমরা দেখাব এমন ৫ জন নেতা-নেত্রীর ধর্ষণ নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, যার জেরে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল। তালিকায় রয়েছেন, মুলায়ম সিং যাদব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেত্রী। আসুন দেখি।
আরও পড়ুন : প্রতি মাসে পড়ুয়াদের ৫ হাজার টাকা দেবে রাজ্য, কারা-কীভাবে পাবেন?
'পুরুষরা পুরুষই, তারা ভুল করেই থাকে' : এই মন্তব্য করেছিলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা মুলায়ম সিং যাদব। ধর্ষণের সাজা ফাঁসি হওয়া উচিত, এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, 'মেয়েরা প্রথমে বন্ধুত্ব করে। তারপর মতভেদ-ঝগড়া হলেই তারা ছেলেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে আসে। পুরুষ তো পুরুষই হয়। তাদের ভুল করে বসে। সেজন্য কি ফাঁসি দিতে হবে।
'ছেলে-মেয়েদের অবাধ মেলামেশার জন্য ধর্ষণ' : ২০১২ সালে এই মন্তব্য করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশে ধর্ষণের ঘটনা কেন বাড়ছে সেই সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে এই আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, 'আগে নারী-পুরুষ হাত ধরে চললে বাবা-মায়ের চোখে ঠিক ধরা পড়ে যেত। অভিভাবকরা ছেলে-মেয়েদের ভর্ৎসনা করতেন। কিন্তু এখন সবই খোলামেলা। সবই অবাধ।'
'ধর্ষণ আটকাতে ছেলে-মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে করা দরকার': হরিয়ানার খাপ পঞ্চায়েত সদস্য সুবে সিং দাবি করেছিলেন, বিয়ের জন্য ন্যূনতম বয়সসীমা বাতিল করা উচিত। তিনি বলেছিলেন, ধর্ষণের ঘটনা রোধে মেয়েদের ও ছেলেদের ১৬ বছরের মধ্যে বিয়ে দিতে হবে।
হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওম প্রকাশ চৌটালা এই দাবির সমর্থন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'এক সময় মুঘলদের হাত থেকে বাঁচাতে মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়া হতো। এই রাজ্যে একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আমি মনে করি এই কারণেই খাপ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি তা সমর্থন করি।'
আরও পড়ুন : ভোট আসে ভোট যায়, দেওয়ালে লেখা থাকে প্রতিশ্রুতির ঠিকানা
'ঘরে ছেলে ঢুকিয়ে রেপ করিয়ে দেব' : অভিনেতা এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তাপস পাল এই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। বিরোধীদের শায়েস্তা করার জন্য এই কথা বলেছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের চৌমুহা গ্রামে ভাষণ দেওয়ার সময় এই মন্তব্য করেন তিনি।
তাপস পাল বলেছিলেন, 'যদি বিরোধীদের কেউ বা তাঁদের স্ত্রী-বোনরা এখানে থাকে, তবে শোনো, যদি আপনার লোকদের কেউ তৃণমূলের কারও গায়ে হাত দেয়, তবে আমি আমি তাদের রেহাই দেব না। আমি আমার ছেলেদের পাঠাব এবং ঘরে ঢুকিয়ে রেপ করিয়ে দেব।'
'ধর্ষণ কোনও কোনও সময় ঠিক' : এমন চূড়ান্ত অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলার গৌর। বলেছিলেন, 'ধর্ষণ একটি সামাজিক অপরাধ। যা পুরুষ এবং মহিলাদের উপর নির্ভর করে। কখনও ধর্ষণ সঠিক। কখনও কখনও এটি ভুল।'