President Droupadi Murmu Parliament Speech: উভয় কক্ষে ভাষণের সময় অসম প্রসঙ্গ তুললেও, মণিপুর নিয়ে চুপই রইলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সংসদের উভয় কক্ষে তাঁর ভাষণ উপস্থাপন দেন বৃহস্পতিবার। লোকসভা এবং রাজ্যসভার যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেন।
'উত্তর-পূর্ব ভারতে স্থায়ী শান্তি-উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ চলছে'
অসম প্রসঙ্গ তুললেও এদিন মণিপুর ইস্যু তুললেনই না রাষ্ট্রপতি। এদিন তিনি বলেন, "ভারত উত্তর-পূর্ব ভারতে স্থায়ী শান্তি-উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ চলছে। বুলেট ট্রেনের করিডরের জন্য কাজ চলছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের বিকাশের জন্য চার গুণ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটনের বিকাশ হয়েছে। অসমে সেমি কন্ডাক্টর কারখানা তৈরি হচ্ছে। উত্তর-পূর্বে শান্তি ফেরাতে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে।"
১ জুলাই থেকে ন্যায় সংহিতা চালু হবে
অলিম্পিকে ভারতের প্রতিনিধিত্বকারী সকল খেলোয়াড়কে শুভেচ্ছা। ১ জুলাই থেকে ন্যায় সংহিতা চালু হবে। ব্রিটিশরাজে গোলামি ব্যবস্থায় শাস্তির বিধান ছিল। সেই আইন বদলের সাহস দেখিয়েছে সরকার। এবার শাস্তির বদলে ন্যায়ে বিশেষ জোর দেওয়া হবে। CAA-র অধীনে নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে।
'প্রশ্ন ফাঁসের দোষীদের শাস্তি দিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ'
রাষ্ট্রপতির ভাষণে প্রশ্ন ফাঁসের কথা বলা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেছেন, "সরকার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর আগেও অনেক রাজ্যে পেপার ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এ বিষয়ে দেশব্যাপী দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।"
'খরিফ ফসলের জন্য এমএসপি রেকর্ড বৃদ্ধি'
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির অধীনে সরকার দেশের কৃষকদের ৩ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ প্রদান করেছে। সরকারের নতুন মেয়াদ শুরু হওয়ার পর থেকে কৃষকদের কাছে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি হস্তান্তর করা হয়েছে। সরকার খরিফ ফসলের জন্য এমএসপিতেও রেকর্ড বৃদ্ধি করেছে। আজকের ভারত তার বর্তমান চাহিদার কথা মাথায় রেখে তার কৃষি ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনছে। বর্তমানে বিশ্বে জৈব পণ্যের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। ভারতীয় কৃষকদের এই চাহিদা মেটাতে সম্পূর্ণ সক্ষম, তাই সরকার প্রাকৃতিক চাষ এবং এর সাথে সম্পর্কিত পণ্যগুলির সরবরাহ শৃঙ্খলাকে শক্তিশালী করছে।"
'শক্তিশালী ভারতের জন্য আমাদের বাহিনীতে আধুনিকতা প্রয়োজন'
রাষ্ট্রপতির ভাষণেও জরুরি অবস্থার কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেন, "সংবিধানকে বহুবার আক্রমণ করা হয়েছে। জরুরি অবস্থার সময় দেশটিতে হই চই হয়েছিল। শক্তিশালী ভারতের জন্য আমাদের বাহিনীতে আধুনিকতা প্রয়োজন। যুদ্ধের পরিস্থিতিতে সেরা হয়ে উঠতে হলে বাহিনী সংস্কারের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। এই চিন্তা মাথায় রেখে সরকার গত ১০ বছরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। গত এক দশকে আমাদের প্রতিরক্ষা রপ্তানি ১৮ গুণ বেড়ে ২১ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।"
'মহিলা ক্ষমতায়নে কাজ করা হয়েছে'
এদিন তিনি আরও বলেন, "গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। মহিলা ক্ষমতায়নে কাজ করা হয়েছে। নারীশক্তি বন্ধন অধিনিয়মের শক্ত রয়েছে। বিগত এক দশকে মহিলাদের আর্থিক ক্ষমতা বেড়েছে। আবাস যোজনাও হচ্ছে। লাখপতি দিদি বানানোর জন্য অভিযান চলছে। সরকার চায়, মহিলাদের আয় ও সম্মান বাড়ুক। নমো ড্রোন দিদি যোজনাতেও কাজ চলছে। ড্রোন দেওয়া হচ্ছে, ড্রোন পাইলটের প্রশিক্ষণের কাজ চলছে। কৃষি সখীদের আধুনিক কৃষিকাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।"
‘জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করতে পারে এই সরকার’
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, 'ছয় দশক পর দেশে পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠিত হয়েছে। তৃতীয়বারের মতো এই সরকারের প্রতি জনগণ আস্থা প্রকাশ করেছে। জনগণ জানে একমাত্র এই সরকারই তাদের আশা পূরণ করতে পারে। অষ্টদশ লোকসভা বিভিন্ন দিক থেকে একটি ঐতিহাসিক লোকসভা। অমৃতকালের প্রথম দিকে এই লোকসভা গঠিত হয়েছিল। এই লোকসভাও দেশের সংবিধান গৃহীত হওয়ার ৫৬-তম বর্ষের সাক্ষী হবে। আগামী অধিবেশনে এই সরকার তার মেয়াদের প্রথম বাজেট পেশ করতে যাচ্ছে। এই বাজেট হবে সরকারের সুদূরপ্রসারী নীতি ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের কার্যকরী দলিল। বড় অর্থনৈতিক ও সামাজিক সিদ্ধান্তের পাশাপাশি অনেক ঐতিহাসিক পদক্ষেপও দেখা যাবে এই বাজেটে।"