আর কটা দিন পর শুরু হবে নতুন বছর। ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে লোকসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীও নামতে চলেছেন ভোটের রণাঙ্গনে। কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ভারত জোড়ো যাত্রার পর, উত্তর-পূর্বের মণিপুর থেকে মহারাষ্ট্রের মুম্বই পর্যন্ত ভারত ন্যায় যাত্রা করবেন রাহুল গান্ধী।
রাহুলের ভারত ন্যায় যাত্রা ১৪ জানুয়ারি মণিপুর থেকে শুরু হবে। মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে ২০ মার্চ শেষ হবে যাত্রা। ৬৭ দিনের এই যাত্রায় রাহুল গান্ধী ৬২০০ কিলোমিটার দূরত্ব পার করবেন। কংগ্রেসের কৌশল, এই যাত্রার মাধ্যমে ১৪টি রাজ্যের ৩৫৫টি লোকসভা আসনে প্রচার সেরে ফেলা। মণিপুর থেকে মুম্বই, এই ভারত ন্যায় যাত্রায় নাগাল্যান্ড, অসম, মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং গুজরাটে যাবেন রাহুল। ভারত ন্যায় যাত্রার রুটে যে রাজ্যগুলি আছে, সেগুলির অবস্থা খুবই সঙ্গিন। এই ১৪টি রাজ্যে মোট ৩৫৫টি লোকসভা আসন রয়েছে। মণিপুরে ২, নাগাল্যান্ডে ১, অসমে ১৪, মেঘালয়ে ২, পশ্চিমবঙ্গে ৪২, বিহারে ৪০, ঝাড়খণ্ডে ১৪, ওড়িশায় ২১, ছত্তিশগড়ে ১১, উত্তর প্রদেশে 80, মধ্যপ্রদেশে ২৯, রাজস্থানে ২৫টি আসন। গুজরাতে ২৬টি লোকসভা আসন এবং মহারাষ্ট্রে ৪৮টি লোকসভা আসন রয়েছে।
মণিপুরে থেকে কংগ্রেসের যাত্রা শুরু হবে। সে রাজ্যে একটিও আসন নেই কংগ্রেসের। নাগাল্যান্ডেও তারা শূন্যে নেমে এসেছে। অন্যদিকে অসমে ১৪টি আসনের মধ্যে মাত্র তিনটি কংগ্রেসের হাতে মেঘালয়ে একটি আসন। পশ্চিমবঙ্গ ও ছত্তিসগঢ়ে কংগ্রেসের হাতে মাত্র দুটি আসন। ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে একজন করে সাংসদ তাদের। ২০১৯ সালে রাজস্থান ও গুজরাতে খাতা খুলতে পারেনি কংগ্রেস। এই ১৪টি রাজ্যের ৩৫৫টি আসনের মধ্যে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস মাত্র ১৪টি আসন পেয়েছিল। উল্টোদিকে, দিল্লির ক্ষমতায় আসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এই রাজ্যগুলিতে পেয়েছিল ২৩৭টি আসন। ২৮২ আসন জাদু সংখ্যা। অর্থাৎ এই রাজ্যগুলির আসনেই বিজেপি তার কাছাকাছি চলে গিয়েছিল ২০১৯ সালে। সুতরাং, কংগ্রেসের হারানো জমি পুনরুদ্ধার করতে নামছেন রাহুল গান্ধী। তাঁর কাছে মূলত জোড়া চ্যালেঞ্জ, প্রথমত, হিন্দুত্ব, দ্বিতীয়ত, নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তার মোকাবিলা।
এই ১৪টি রাজ্যে কী রণকৌশল?
কংগ্রেসের জন্য চ্যালেঞ্জ হিন্দি বলয়ে। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের মতো রাজ্যে মণ্ডল বনাম কমণ্ডল তো আছেই, সেই সঙ্গে রাম মন্দির বড় ইস্যু। ভারত ন্যায় যাত্রায় ইঙ্গিত, জাতপাত, বিশেষত ওবিসি রাজনীতিকে শাণিত করার কৌশল নিতে চলেছে কংগ্রেস। জাতিগণনার বিষয়টি তুলেছে তারা। উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের রাজনীতিতে সামাজিক ন্যায়বিচার বড় ফ্যাক্টর। সামাজিক ন্যায়বিচার বিজেপির জোটসঙ্গী সুভাসপা, অপনা দল, সোনেলাল এবং ইউপিতে নিষাদ পার্টির পাশাপাশি বিহারে আরজেডি-র মতো দলগুলির রাজনীতির ভিত্তি। কংগ্রেসের কৌশল, নিম্নবর্গের ভোটকে ফিরিয়ে আনা। কংগ্রেস প্রায় সমস্ত রাজ্যে হিন্দুত্বের মোকাবিলার দাওয়াই খুঁজতে চাইছে। এখন দেখার রাহুল গান্ধী কতটা সফল হন?