
জল্পনা আগেই ছিল, অবশেষে সেই দিন এল। মহারাষ্ট্রের পুর ভোটের আগেই অতীত ভেদাভেদ ভুলে এক হলেন ঠাকরে ব্রাদার্স। BMC ভোটের আগে শিবসেনা ও নব নির্মাণ সেনার জোটকে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এদিন জোট ঘোষণার অনুষ্ঠান থেকে নব নির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরে বলেন, "আমি একসময় বলেছিলাম, যে কোনও লড়াইয়ের চেয়ে মহারাষ্ট্র বড়। সেই জায়গা থেকেই আমরা একসঙ্গে হলাম। তবে আজ আমি আসন বিভাজন সংক্রান্ত কোনও তথ্য জানাব না।" এর সঙ্গেই তিনি বলেন, "অনেক দুষ্কৃীতি গ্যাং রয়েছে, যারা বাচ্চাদের কিডন্যাপ করে। কিন্তু এখন এমন আরও দুটো দল হয়েছে, যারা প্রার্থীদের কিডন্যাপ করছে। আমি এখানে জোট ঘোষণা করতে এসেছি।"
অন্যদিকে, শিব সেনা (UBT) প্রধান উদ্ধব ঠাকরে বলেন, "১০৭ জনকে হারিয়ে আমরা মহারাষ্ট্রকে ফিরে পেলাম। আমাদের ঠাকুরদা এই আন্দোলনের নেতা ছিলেন। আমার ও রাজ ঠাকরের বাবাও এই আন্দোলনে শামিল ছিলেন।"
শিব সেনার নেতা সঞ্জয় রাউত বুধবার উদ্ধব ও রাজ ঠাকরের জোটবদ্ধ হওয়াকে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, "এখানে এত মানুষের উপস্থিতি ও তাঁদের উৎসাহ দেখে বলা যেতে পারে, আজ একটা ঐতিহাসিক দিন।"
বিপুল জনসমাগমকে উদ্দেশ করে উদ্ধব ঠাকরে বলেন, মহারাষ্ট্রের নেতৃত্বে আছে ঠাকরে পরিবার। তিনি বলেন, "একমাত্র ঠাকরেই মহারাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দিতে পারবে।" তাঁর এই বক্তব্য ঘিরেই জোর জল্পনা ছড়িয়েছে। তবে কি মহারাষ্ট্রের রাজ-রাজনীতিতে দুই ঠাকরে ভাইয়ের হাত ধরেই পুনরুত্থান ঘটতে চলেছে।
ইতিহাস বলছে, ২০০৬ সালে রাজ শিবসেনা ছেড়ে নিজের দল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (MNS) গঠন করেছিলেন। বালাসাহেব তখনও বেঁচে এবং রাজনীতিতেও সক্রিয়। তবে উদ্ধবের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। বস্তুত, দীর্ঘ দিন বালাসাহেবের ‘রাজনৈতিক সহযোগী’ ছিলেন রাজই। সে সময় উদ্ধব ব্যস্ত থাকতেন বন্যপ্রাণীদের ফটো তোলার শখ নিয়ে। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে মারাঠি জনসমাজে ঢেউ তুললেও দীর্ঘমেয়াদি রাজনীতিতে সফল হতে পারেননি রাজ। অন্য দিকে, বালাসাহেবের মৃত্যুর পর শিবসেনার নেতৃত্বে উঠে আসেন উদ্ধব।
তখন থেকেই টানা ২০ বছর ভিন্নমতে রাজনীতি করছিলেন দুই ভাই। অবশেষে এক হচ্ছেন তাঁরা। অবশ্যই নজরে রয়েছে মারাঠা অস্মিতা। এবার দুই ভাইয়ের পুনর্মিলন মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজনীতিতে নতুন কোনও সমীকরণ গড়ে তুলবে কি না, তা সময়ই বলবে।