
গুজরাটের রাজকোটে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। তিন বছরের দাম্পত্য জীবনের অশান্তি, অবিশ্বাস ও প্রতিদিনের কালহ শেষে স্ত্রীকে খুন করে তার নিখোঁজ হওয়ার জন্য ‘ফুচকা খেতে বেরোনোর’ গল্প সাজিয়েছিল স্বামী। শেষ পর্যন্ত নিজের তৈরি ফাঁদেই ধরা পড়ল সে। নিহত মহিলার নাম স্নেহাবেন আসোদিয়া (৩৩)। অভিযুক্ত স্বামী হিতেশ আসোদিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
ফুচকার গল্পে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা
ঘটনার শুরু শনিবার সন্ধ্যায়। হিতেশ পুলিশকে জানায়, তার স্ত্রী ফুচকা খেতে বাইরে গিয়েছিলেন এবং আর বাড়ি ফেরেননি। অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ এক মহিলার দেহ উদ্ধার করে। যার মাথা থেতলানো ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে দেহটি স্নেহার বলে শনাক্ত হয়।
দাম্পত্যে অশান্তি ছিল চরমে
পুলিশ তদন্তে উঠে আসে, বিবাহের শুরু থেকেই দম্পতির মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। স্নেহা স্বামীকে নিয়ে সন্দেহপ্রবণ ছিলেন। কর্মস্থলে থাকা অবস্থায় বারবার ফোন করা, তর্ক-বিতর্ক, এসব নিয়ে পরিবারে প্রায় প্রতিদিনই ঝগড়া হত। কারখানায় কাজ করা হিতেশ মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল বলে পুলিশ জানায়। এই দম্পতির দুই বছরের একটি সন্তানও রয়েছে, যাকে প্রতিদিনই হিতেশকে তার বাবা-মায়ের বাড়িতে রেখে কাজ করতে যেতে হত।
কীভাবে ঘটল খুন?
শনিবার স্নেহা বাইরে বেড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি মনে করিয়ে দিলে আবার ঝগড়া শুরু হয়। রাগের মাথায় হিতেশ ওয়ার্কশপ থেকে লোহার রড নিয়ে বেরিয়ে আসে। পরে স্ত্রীকে স্কুটারে করে বাড়ির কাছের নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। মলত্যাগের ভান করে স্কুটার থামিয়ে হিতেশ লোহার রডটি সামনে রেখে পিছন থেকে আঘাত করে। স্নেহা ঘটনাস্থলেই মারা যান।
শেষ পর্যন্ত স্বীকারোক্তি
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি ধরা পড়তেই শুরু হয় চাপ। শেষ পর্যন্ত হিতেশ খুনের কথা স্বীকার করে এবং লোহার রড দিয়ে আঘাতের বিবরণ দেয়। বর্তমানে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। রাজকোটে এই নির্মম ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশের মতে, দাম্পত্য অশান্তি দীর্ঘদিন ধরে এই দুর্ভাগ্যজনক পরিণতির দিকে এগোচ্ছিল।