হরিয়ানার রোহতকে কংগ্রেস নেত্রী হিমানী নারওয়ালের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত সচিনকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফেসবুকে আলাপ থেকে শুরু হওয়া সম্পর্ক পরিণত হয় চরম পরিণতিতে, যার জেরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ার পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় হিমানীকে। হত্যার পর দেহ গোপন করতে শচিন তা একটি ট্রলিব্যাগে ভরে সাম্পলা এলাকায় ফেলে দেয় বলে পুলিশ জানায়।
ফেসবুক থেকে বন্ধুত্ব, তারপর প্রেম
পুলিশি তদন্ত অনুযায়ী, সচিন ও হিমানীর বন্ধুত্ব হয়েছিল ফেসবুকের মাধ্যমে। বন্ধুত্ব গাঢ় হয়ে প্রেমে রূপ নেয় এবং সচিন প্রায়ই হিমানীর বাড়িতে যেতেন। ২৭শে ফেব্রুয়ারি রাতে সচিন হিমানীর বাড়িতে ছিলেন। পরের দিন সকালে, কোনো বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে তীব্র ঝগড়া হয়, যা একসময় হিংস্র রূপ নেয়। শচিন হিমানীকে ওড়না দিয়ে বেঁধে মোবাইল চার্জারের তার দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা
হত্যার পর শচিন দ্রুত প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করে। সে লেপের কভার খুলে মৃতদেহ একটি স্যুটকেসে ঢুকিয়ে দেয়। এরপর হিমানীর সোনার গয়না, মোবাইল, ল্যাপটপ ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র একটি ব্যাগে ভরে তার স্কুটিতে করে বাহাদুরগড় চলে যায়। পরে রাত ১০টায় সে আবার হিমানীর বাড়িতে ফিরে এসে অটো ভাড়া করে দেহটি সাম্পলা এলাকায় ফেলে দেয়।
তদন্ত ও গ্রেফতার
১লা মার্চ, সাম্পলা বাস স্ট্যান্ডের কাছে একটি স্যুটকেসে হিমানীর মৃতদেহ পাওয়া গেলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তের দায়িত্ব নিতে বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করা হয়। বিভিন্ন সূত্র ধরে দিল্লি থেকে সচিনকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে হিমানীর মোবাইল, গয়না ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
পরিবারের প্রতিক্রিয়া
হিমানীর পরিবার প্রথমে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে অস্বীকৃতি জানায়, যতক্ষণ না হত্যাকারী গ্রেফতার হয়। তার মা সবিতা নারওয়াল অভিযোগ করেন, হিমানীর রাজনৈতিক অগ্রগতির কারণে দলের কিছু লোক ঈর্ষান্বিত ছিল। শচিনের গ্রেফতারের পর পরিবার ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা করছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক
এই হত্যাকাণ্ড হরিয়ানার রাজনীতিতে বড়সড় আলোড়ন তুলেছে। কংগ্রেস রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, যেখানে বিজেপি এটিকে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জটিলতা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে।