অ্যারো ইন্ডিয়া ২০২৫-এ ধামাকা হতে চলেছে। রাশিয়ার পঞ্চম প্রজন্মের সবচেয়ে উন্নত স্টিলথ ফাইটার জেট Su-57 ভারতে আসছে Aero India 2025-এ যোগ দিতে। রাশিয়া প্রতিনিয়ত Su-57 এর শক্তি দেখানোর চেষ্টা করছে। অনেকেই মনে করছেন, ভারত যাতে এই যুদ্ধবিমান কেনে তার জন্য বারেবারে পরোক্ষে বার্তা দিয়ে চলেছে রাশিয়া। কারণ, স্টিলথ ফাইটার জেট হাতেগোনা কয়েকটি দেশের কাছে রয়েছে। তার মধ্যে রাশিয়াও রয়েছে। ভারতের কাছে এখনও কোনও পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নেই। ভবিষ্য়তে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি AMCA হতে পারে ভারতের পঞ্চম বা তার বেশি প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার জেট। বর্তমানে ভারতের বায়ুসেনায় বিমান বহরের সংখ্যা কমে গিয়েছে। তাই ভারত আপাত পরিস্থিতি স্টিলথ ফাইটার কিনতে পারে বলে জল্পনা ছড়িয়েছে। এটাও জল্পনা ছড়িয়েছে যে Su-57 কেনার ভাবনা চিন্তা রয়েছে ভারতের।
শুধু কি বিমান কেনা হবে? নাকি প্রযুক্তি হস্তান্তরের অধীনে ভারতেও উৎপাদন? কারণ ভারতে উৎপাদন হলে, দেশে মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পের প্রসার ঘটবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়বে। ভারতে তৈরি ফাইটার জেট বিক্রির ফলেও লাভবান হবে রাশিয়া। ভারত যদি রাশিয়ার সঙ্গে এই ফাইটার জেটের চুক্তি করে, তাহলে চিন ও পাকিস্তানের সমস্যা অনেক বেড়ে যাবে। আসুন জেনে নেই এই ফাইটার জেটের শক্তি।
বিপজ্জনক গতি এবং মারাত্মক অস্ত্র
Su-57 এর গতি ২৬০০ কিমি/ঘণ্টা। এর ১২টি হার্ডপয়েন্ট রয়েছে। মানে ভেতরে ছয় আর বাইরে ছয়। এটি অনেক স্বল্প, মাঝারি এবং দীর্ঘ পাল্লার এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল এবং গাইডেড এরিয়াল বোমা বহন করা যেতে পারে। ইউক্রেনের উপর হাজার হাজার বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে Su-57 এ লাগানো একটি অস্ত্র। ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়া এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছে। Su-57 এর স্টিলথ সিস্টেম গতি না কমিয়েই কাজ করে। এটি যুদ্ধে এবং পালানোর ক্ষেত্রে উপকারী।
সুপারসনিক মাল্টিরোল ফাইটার
রাশিয়ান এই ফাইটার জেট একটি মাল্টি-রোল ফাইটার জেট। এটি অনেক ধরনের অপারেশন করতে পারে। এয়ার সুপিরিওরিটি থেকে স্ট্রাইক মিশন। Su-57 এর যুদ্ধের পরিসীমা ১২৫০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ ৬৬ হাজার ফুট উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে। Su-57 সুপারসনিক। এই ফাইটার জেটের দৈর্ঘ্য ৬৫.১১ ফুট, ডানা ৪৬.৭ ফুট চওড়া। এই বিমানের উচ্চতা ১৫.১ ফুট। সুপারসনিক রেঞ্জ ১৫০০ কিমি।
২০১৯ সাল থেকে রাশিয়ান বিমান বাহিনীতে
রাশিয়া মোট ৩২টি Su-57 যুদ্ধবিমান তৈরি করেছে। এর রেঞ্জ ৩৫০০ কিমি। যদি দুটি আউটবোর্ড ফুয়েল ট্যাঙ্ক লাগানো হয় তবে এটি ৪৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে। এতে একটি ৩০ মিমি অটোকানন লাগানো আছে। এই বন্দুকটি প্রতি মিনিটে ১৫০০ থেকে ১৮০০ গুলি ছুড়তে পারে। এই বন্দুকের রেঞ্জ ১৮০০ মিটার পর্যন্ত।
কেন ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই ফাইটার জেট?
ভারতের বায়ুসেনার AMCA প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হতে কমপক্ষে ১০ বছর সময় লাগবে। চিনের কাছে পঞ্চম প্রজন্মের ২০০টি যুদ্ধবিমান রয়েছে। চিন ও তুরস্কের কাছ থেকে উন্নত ফাইটার জেট পাবে পাকিস্তান। এর আগে ভারত যদি এগুলো তৈরি করতে না পারে, তাহলে আমেরিকা বা রাশিয়ার কাছ থেকে এ ধরনের যুদ্ধবিমান কিনতে হবে। যদিও বর্তমানে রাশিয়ার থেকে যুদ্ধবিমান কিনতে আগ্রহী নয় ভারত। কারণ এই ধরনের বিমান দেশেই তৈরি করতে চাইছে তারা।