বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার পর পরই ভারতে এসেছেন শেখ হাসিনা। তারপর থেকে ভারতেই রয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। সূত্রের খবর, ভারতে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে হাসিনাকে। বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার সর্বদল বৈঠক করে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই বৈঠকে হাসিনাকে নিয়ে কথা হয়েছে বলে খবর। এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, 'বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছেন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা স্থির করতে হাসিনাকে সময় দিতে চায় সরকার।'
সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার পর বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে সেনার বিমানে চড়ে ভারত আসেন হাসিনা। গাজিয়াবাদে হিন্ডন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নামে বিমান। তারপর থেকে ভারতেই রয়েছেন তাঁরা। মঙ্গলবার সকালে ওই বিমানটিকে আকাশে উড়তে দেখা যায়। পরে জানা যায় যে, খালি বিমানটি বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছে।
হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে বাংলাদেশে অশান্তি নয়া মাত্রা যোগ করেছে। চারদিকে লুঠপাট, ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। মেহেরপুরে ইস্কন মন্দিরে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সূত্রের খবর, এদিন সর্বদল বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী বলেন যে, বাংলাদশে পরিস্থিতি ততটাও উদ্বেগজনক নয় যে, ১২ থেকে ১৩ হাজার ভারতীয়কে বাংলাদেশ থেকে এখনই উদ্ধারের প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশ পরিস্থিতির দিকে সর্বদা নজর রাখছে নয়াদিল্লি।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রায় ৮ হাজার ভারতীয় বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিরাপদে ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই পড়ুয়া। এদিন সর্বদল বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। বাংলাদশে যে সরকারই আসুক না কেন, তার সঙ্গে ভারতকে 'ডিল' করতে হবে। প্রসঙ্গত, হাসিনা 'ভারতবন্ধু' বলেই পরিচিত। হাসিনার জয়ের পর 'ইন্ডিয়া আউট' কর্মসূচি শুরু হয়েছিল।
১৫ বছরের শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটেছে সোমবার। শাসনভার এখন সেনার হাতে। সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী পদে হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই পদ্মার ওপারে অশান্তি নতুন মাত্রা নিয়েছে। হামলা, লুঠ, খুনোখুনি চলছে। বাংলাদেশের সংবাদপত্র দ্য ডেইলি স্টার সূত্রে খবর, ২৭টি জেলায় হিন্দুদের বাড়ি, দোকানে হামলা চালানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলায় সোমবার সন্ধ্যায় তেলিপাড়া গ্রামে প্রদীপ চন্দ্র রায় নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। মুহিন রায় নামে এক ব্যক্তির কম্পিউটারের দোকানও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামে ৪ হিন্দু পরিবারে হামলা, লুঠ চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। হাতিবাঁধা উপজেলার পূর্ব সরডুবি গ্রামে ১২টি হিন্দু ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।