এবার বাংলাদেশে রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর ইস্যুটি সংসদেও তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, বাংলাদেশ ইস্যুতে বিবৃতি দিক কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বাংলাদেশে হিন্দু সহ সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন নিয়েও সংসদে সরব হলেন সুদীপ। সুদীপ যখন রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিবাহিনীর প্রস্তাব দিচ্ছেন, তখন রাজ্যসভায় পশ্চিমবঙ্গের অনুপ্রবেশ ইস্যু তুলে গুরুতর দাবি করলেন বিজেপি-র রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিবাহিনী পাঠানোর আর্জি
বাংলাদেশে হিন্দু সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের উপর নির্যাতন নিয়ে সোমবারই বিধানসভায় মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাংলাদেশ সমস্যা সমাধানের প্রস্তাবে জানান, ভারত সরকার রাষ্ট্রসঙ্ঘে আবেদন করুক, বাংলাদেশে শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর জন্য। মমতা বলেন, 'আমাদের প্রস্তাব, কেন্দ্র রাষ্ট্রসঙ্ঘের কাছে বাংলাদেশে শান্তি বাহিনী পাঠানোর আর্জি জানাক। বাংলাদেশ নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিন প্রধানমন্ত্রী। যদি তাঁর কোনও অসুবিধা থাকে, তবে বিদেশমন্ত্রী বিবৃতি দিন।' মমতার এর বক্তব্যের পরেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পাল্টা বলেন, তৃণমূল এই দাবি সংসদে উত্থাপন করুক। একাধিক সাংসদ আছেন।
'ভারত সরকার সম্পূর্ণ চুপ এই বিষয়ে'
এরপরেই আজ দেখা গেল সংসদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবটি উত্থাপন করলেন সুদীপ। সুদীপের কথায়, 'ভারত সরকার সম্পূর্ণ চুপ এই বিষয়ে। আমাদের দাবি, বিদেশমন্ত্রী সংসদে এসে বাংলাদেশ ইস্যুতে বিবৃতি দিন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় রেজোলিউশন এনেছেন, বাংলাদেশ ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকার যে অবস্থান নেবে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই অবস্থানকেই সমর্থন করবে। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই।'
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে মারাত্মক দাবি শমীকের
তবে এদিন রাজ্যসভায় মারাত্মক দাবি করেন শমীক ভট্টাচার্য। পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ইস্যু তুলে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন তিনি। শমীক বলেন, 'সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স, ভারত সরকারের পরমাণু বিভাগের অধীনে রয়েছে। এর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। ওই কেন্দ্র হাই সিকিওরিটি জোন বলে বিবেচিত হয়। অথচ উত্তরের দেওয়ালের বাইরে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীরা এসে ভিড় জমিয়েছেন। সব বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমরা এমন এক রাজ্যে রয়েছি, যেখানে অনুপ্রবেশকারীদের স্বাগত জানানো হয়। দুই হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানাই। পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের বাইরে রোহিঙ্গারা বসে থাকলে, আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছি, তা নিয়ে ভাবনার অবকাশ রয়েছে। পুলিশের কাছে চার চার বার গেলেও সে নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। রাজ্যের সরকারের জন্যই আজ এমন পরিস্থিতি রাজ্যের সরকার অনুপ্রবেশে অনুপ্রেরণা জোগায়। বাংলাদেশের কথা পরে হবে। প্রতিদিন যে অনুপ্রবেশকারীরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়ছে, দেশের জাতীয় নিরাপত্তা যে প্রশ্নের মুখে, তার জন্য দায়ী রাজ্য সরকার।'