Hindenburg Report: হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ 'ভিত্তিহীন'। এমনটাই জানালেন SEBI চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচ। ১০ অগাস্ট, শর্ট সেলার সংস্থা দাবি করে, এক অভ্যন্তরীণ সূত্র মারফত তারা জানতে পেরেছে যে, সেবি কর্তা বিভিন্ন বেনামী অফসোর সংস্থার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই অফসোর সংস্থাগুলির মাধ্যমেই আদানির শেয়ারের দাম কারচুপি করে বাড়ানো হয়েছিল।
বছর দেড়েক আগের কথা। আদানি গ্রুপের শেয়ারে কারচুপির অভিযোগ তুলেছিল শর্ট সেলার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ। রিপোর্ট প্রকাশের পরপর দ্রুত কমেছিল আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার। তার ১৮ মাসের মাথায় আরও একবার বড় রিপোর্ট প্রকাশ করল হিন্ডেনবার্গ। এবার সরাসরি সেবি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শেয়ারে কারচুপিতে সহায়তার অভিযোগ তুলল তারা। হিন্ডেনবার্গের সেই দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন SEBI চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচ।
নতুন রিপোর্টে হিন্ডেনবার্গের দাবি, আদানি গ্রুপ এবং সেবি প্রধান মাধবী পুরি বুচের মধ্যে যোগ রয়েছে।
এই বিষয়ে SEBI চেয়ারপার্সন একটি বিবৃতি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। এটি তাঁর মানহানি করার একটি প্রচেষ্টা মাত্র।
'হিন্ডেনবার্গের অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই...'
শনিবার হিন্ডেনবার্গের প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, এক অভ্যন্তরীণ সূত্রের থেকে প্রাপ্ত নথি থেকে জানা গিয়েছে যে, মাধবী বুচ এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচ সিঙ্গাপুরে ৫ জুন, ২০১৫-তে আইপিই প্লাস ফান্ড 1-এ তাঁদের অ্যাকাউন্ট খোলেন। তাতে এই দম্পতির মোট বিনিয়োগ আনুমানিক ১০ কোটি ডলার। হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ, অফশোর মরিশাস ফান্ডটি ইন্ডিয়া ইনফোলাইনের মাধ্যমে আদানি গ্রুপের একজন ডিরেক্টর চালু করেছিলেন।
আমেরিকান শর্ট সেলার সংস্থার সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে, SEBI চেয়ারপারসন মাধবী পুরী বুচ এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচ রবিবার সকালে একটি বিবৃতি জারি করেছেন। সেখানে তাঁরা জানিয়েছেন, '১০ অগাস্ট হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে যে অভিযোগগুলি করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। এর কোনও সত্যতা নেই। আমাদের জীবন টাকাপয়সা খোলা বইয়ের মতো। আমাদের যা কিছু প্রকাশ করার প্রয়োজন ছিল, সেই সমস্ত তথ্য সেবি-কে প্রত্যেক বছর বছর দেওয়া হয়েছে।'
'সেবি-র পদক্ষেপের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় এটা করা হয়েছে'
মাধবী পুরী বুচ আরও বলেন, 'আমরা যখন সম্পূর্ণ সাধারণ নাগরিক ছিলাম, সেই সময়কার কোনও আর্থিক নথি প্রকাশ করতেও আমাদের কোনও দ্বিধা নেই। যেকোনও আধিকারিক এগুলি চাইতে পারেন।' SEBI প্রধান তাঁর বিবৃতিতে আরও বলেছেন, 'এটি দুর্ভাগ্যজনক যে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ, যাদের বিরুদ্ধে SEBI এনফোর্সমেন্ট পদক্ষেপ নিয়েছে এবং শো-কজ নোটিশ জারি করেছে, তারা এখন তার প্রতিক্রিয়া হিসাবে আমাদের চরিত্রকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে।' তিনি বলেন, 'আমরা যথাসময়ে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে বিস্তারিত বিবৃতি জারি করব।'
হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে কী বলা হয়েছে?
একটি ব্লগ পোস্টে হিন্ডেনবার্গ সেবি প্রধান এবং তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ করেছেন। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, SEBI চেয়ারপার্সন মাধবী পুরি বুচ এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচ বারমুডা এবং মরিশাসের মতো কর সাশ্রয়ী দেশে দুইটি ফান্ডে টাকা রেখেছেন। হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ, এই দুই ফান্ড গৌতম আদানির বড় ভাই বিনোদ আদানিও ব্যবহার করেছিলেন।
কনসাল্টেন্সি ফার্মের মাধ্যমে মোটা টাকা আয়ের অভিযোগ
হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে বলা হয়েছে, 'আমাদের সন্দেহ, সেবির সঙ্গে আদানি গ্রুপের যোগসাজশ থাকতে পারে। সেই কারণেই আদানি গ্রুপের সঙ্গে জড়িত অফশোর শেয়ারহোল্ডারদের বিরুদ্ধে তারা কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাধবী পুরী বুচ 'আগোরা অ্যাডভাইজরি' নামের কনসাল্টেন্সি ফার্মে ৯৯% স্টেক হোল্ডার ছিলেন। ১৬ মার্চ, ২০২২-এ SEBI চেয়ারপার্সন হিসাবে নিযুক্ত হওয়ার দুই সপ্তাহ আগে, তিনি তাঁর স্বামী ধবল বুচের নামে তাঁর মালিকানাধীন শেয়ার ট্রান্সফার করেছিলেন।' তাঁর স্বামী ধবল বুচ এই কোম্পানির ডিরেক্টর। কোম্পানিটির বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী, FY2022-এ তাদের রেভেনিউ ১.৯৮ কোটি টাকা। এটি মাধবী পুরী বুচের বেতনের চেয়ে ৪.৪ গুণ বেশি।