বুধবারই গাজিয়াবাদে বিজেপি অফিসে গিয়ে গেরুয়া ঝান্ডা হাতে নিয়েছিলেন কপিল গুজ্জর। যাকে নিয়ে চলতি বছরের শুরুতে তোলপাড় হয়েছিল দেশ। শাহীন বাগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছিল তখনি প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন কপিল। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁকে মিষ্টি খাইয়ে বরণ করে নেওয়ার ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু দলে যোগদানের ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই কপিল গুজ্জরকে বহিষ্কার করে দিল গেরুয়া শিবির।
চমকে দেওয়া ইতিহাস! সোমনাথ মন্দিরের নীচে ৩ তলা ভবনের অস্তিত্ব
এদিনে কপিল গুজ্জরের বিজেপিতে যোগদানের খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভ উগড়ে দেন নেটিজেনরা। সূত্রের খবর, সেই কারণেই তাঁকে শেষ পর্যন্ত দল থেকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি নেতৃত্ব। প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের বিজেপি নেতা সঞ্জীব শর্মা জানান, ‘বিএসপি থেকে যাঁরা দলে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে কপিল গুজ্জর একজন। শাহিনবাগের ঘটনায় তিনি কীভাবে জড়িত ছিলেন, তা আমাদের জানা ছিল না। জানতে পেরেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
শূন্যে গুলি চালিয়ে শিরোনামে, বিজেপিতে যোগ দিলেন শাহিনবাগের কপিল
বুধবার ভারতীয় জনতা পার্টিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিয়ে কপিল সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিজেপি হিন্দুত্বের পক্ষে কাজ করে। এজন্যই তিনি বিজেপিতে যোগ দিলেন। চলতি বছরর শুরুতে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন কপিল । বছর শেষের আগে ফের একবার তাঁকে নিয়ে সরগরম মিডিয়া। চলতি বছরের শুরুতে দিল্লির শাহীন বাগে চলছিল সিএএ বিরোধি আন্দোলন। আর সেই শাহীন বাগ অঞ্চলেই পয়লা ফেব্রয়ারি শূন্যে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে খবরে আসেন কপিল। ঘটনায় হতাহতের খবর না থাকলেও তিন রাউন্ড গুলি চালানোর পর পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। নিয়ে যাওয়া হয় সরিতা বিহার থানা। জানা যায়,নয়ডা থেকেই দিল্লি এসেছিল কপিল। গ্রেফতারের পর সে পুলিশকে জানায়,'আমাদের দেশ হিন্দুরাষ্ট্র। হিন্দু ছাড়া অন্য কারোর এদেশে বসবাসের অধিকার নেই'। সেদিন ঘটনাস্থল থেকে কার্তুজও উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর গত মার্চে ২৫ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান কপিল। জেল থেকে বেড়তেই সেবার ঢাক-ঢোল বাজিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছিল তাঁকে। সেই সময় থেকেই শাহিনবাগের ‘বন্দুকবাজ’ নামেই পরিচিত তিনি।
পুলিশি জেরায় কপিল জানিয়েছিলেন সে ও তাঁর বাবা গজে সিং ২০১৯ সাল থেকে আম আদমি পার্টির সদস্য। ফেনে সঞ্জয় সিং ও অতশীর মত আপ নেতৃত্বের সঙ্গে নিজের ফটোও পুলিশকে দেখান কপিল। যদিও আজ ও গুজ্জর পরিবার কপিলের সেই দাবিকে উড়িয়ে দেয়। তবে ২০১২ সালে বহুজন সমাজ পার্টির টিকিটে দিল্লি পুরভোটে একাবর দাঁড়িয়েছিলেন কপিলের বাবা গজে সিং। তবে সেই নির্বাচনে হেরে যান তিনি।
এদিকে বুধবার গুজ্জর বিজেপিতে যোগ দিতেই আক্রমণ শানায় কংগ্রেস। কংগ্রেস সাংসদ রিপুন বোরা বলেন, ‘সমাজ–বিরোধী, দাঙ্গাবাজরা আর কোথায় যাবে? ভেবে চিন্তেই দল বেছেছেন উনি। এবার আরেকটু ধৈর্য ধরুন, কিছু দিনের মধ্যেই তাঁকে বড় পদ ধরিয়ে দেবে ভারতীয় গুণ্ডা পার্টি। ভারতের জন্য ভয়ঙ্কর এই বিজেপি।’ কপিলের বিজেপি যোগ নিয়ে কটাক্ষ করে আম আদমি পার্টিও।