প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুর পরদিন ভিয়েতনাম সফরে যাওয়া নিয়ে রাহুল গান্ধীকে নিশানা করলে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুকে দেশ শোকে মুহ্যমান ছিল। তখন ভিয়েতনাম সফরে গিয়ে ঠিক করেননি রাহুল। বুধবার ইন্ডিয়া টুডে টিভি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,'দেশের একজন সাধারণ, উদ্বিগ্ন নাগরিক হিসাবে, আমি অবশ্যই রাহুল গান্ধীকে প্রশ্ন করতে চাই যে দেশ যখন একজন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছিল, যিনি কংগ্রেস দলের একজন বিশিষ্ট সদস্য ছিলেন, তখন রাহুলকে কেন নতুন বছর সেলিব্রেট করতে বিদেশ সফরে যেতে হয়েছিল? কেন তিনি অপেক্ষা করলেন না?'
মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুর পর থেকে কংগ্রেস ও বিজেপির বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির কন্যা আরও বলেছেন যে তিনি খবর দেখেই জানতে পেরেছিলেন যে মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্যের পরের দিন তার চিতাভষ্ম সংগ্রহের সময় কোনও কংগ্রেস নেতা উপস্থিত ছিলেন না। শর্মিষ্ঠার কথায়,'এটি এমন একটি সময় যখন দলের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের পাশে শক্তভাবে দাঁড়ানো উচিত ছিল। যখন আমার বাবা মারা যান, আমি দলীয় নেতাদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত সমবেদনা পেয়েছিলাম। কোভিডের কারণে তার পরে কেউ আসেনি, এটা ঠিকই আছে। কিন্তু এখন কোভিড নেই, কোনও বিধিনিষেধ নেই। তাহলে কেন রাহুল গান্ধীকে এমনটা করতে হল?'
গত সপ্তাহে রাহুল গান্ধীর সফর নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালভিয়া এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'দেশ যখন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছে, তখন রাহুল গান্ধী ভিয়েতনামে নতুন বছরে উদযাপনে উড়ে গিয়েছেন। রাহুল গান্ধী রাজনীতি করেছেন এবং ডক্টর সিংয়ের মৃত্যুকে তাঁর সমীচীন রাজনীতির জন্য কাজে লাগিয়েছেন। কিন্তু তাঁর প্রতি এই অবজ্ঞা অনস্বীকার্য। গান্ধীরা এবং কংগ্রেস শিখদের ঘৃণা করে। কখনই ভুলে যাবেন না যে ইন্দিরা গান্ধী দরবার সাহেবকে অপবিত্র করেছিলেন।'
যদিও কংগ্রেস এই অভিযোগ খারিজ করে বিজেপির বিরুদ্ধে বিমুখ রাজনীতি করার পাল্ট অভিযোগ করেছে। দলের নেতা মানিকম ঠাকুর জবাবে বলেন,'মিস্টার গান্ধী যদি ব্যক্তিগতভাবে ভ্রমণ করেন, তবে কেন এটি আপনাকে বিরক্ত করে? নতুন বছরে সুস্থ হয়ে উঠুন।' রাহুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা এবং উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াতও। তাঁর দাবি, রাহুলের ভিয়েতনাম সফর ছিল অর্থনীতি এবং সামাজিক ব্যবস্থা অধ্যয়ন করা। রাওয়াত বলেন,'আমি বিশ্বাস করি রাহুল গান্ধী ভিয়েতনামে গিয়েছিলেন পড়াশোনা করতে, বিশ্রাম নিতে নয়। ভিয়েতনাম বর্তমানে তার অর্থনৈতিক নীতি এবং এর সামাজিক ব্যবস্থার জন্য একটি মডেল। তিনি অবশ্যই এই বিষয়গুলির উপর একটি অধ্যয়ন করতে সেখানে গিয়েছিলেন। একজন ব্যক্তির এক বছরের কঠোর পরিশ্রমের পরে কিছুটা সময় নেওয়ার বিষয়ে কোনও রাজনীতি করা উচিত নয়> বিজেপির কোনও এজেন্ডা নেই। তারা সবাই রাহুল গান্ধীর ট্রোলার ব্রিগেড। কয়েকজনকে শুধুমাত্র রাহুল গান্ধীকে ট্রোল করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে।'