কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন শশী থারুর। দলের প্রয়োজনে সবসময় পাশে থাকার আশ্বাস দিলেও, বিকল্পের কথাও জানিয়ে দিলেন কংগ্রেসের এই প্রবীণ নেতা। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেরালার এলডিএফ সরকারের প্রশংসা করায় কংগ্রেসের অন্দরেই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে থারুরকে। তবে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বক্তব্য দেশের বৃহত্তর স্বার্থকে কেন্দ্র করেই।
ভবিষ্যৎ রাজনীতির ইঙ্গিত দিয়ে শশী থারুর বলেন, "আমি দলের জন্য উপলব্ধ। তবে যদি কংগ্রেস আমাকে প্রয়োজন না বলে মনে করে, তবে আমার কাছে অন্য বিকল্পও রয়েছে।" তবে দলবদলের গুজব উড়িয়ে তিনি আশ্বস্ত করেন, "মতভেদ থাকলেও কংগ্রেস ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা নেই।"
মোদী ও কেরালার সরকারের প্রশংসা ঘিরে বিতর্ক
শশী থারুর সম্প্রতি কেরালার বিনিয়োগ-বান্ধব নীতি এবং স্টার্টআপ উদ্যোগের প্রশংসা করেছিলেন। সেইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্যও করেন তিনি। এতে কংগ্রেসের কেরালা ইউনিট তীব্র বিরোধিতা জানায়। তবে থারুরের বক্তব্য, "কোনো বিষয়ে প্রশংসা করা মানেই বিরোধীদের সমর্থন নয়। দেশের স্বার্থে যা ভালো, তা স্বীকার করতে হবে।"
রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক
এলডিএফ সরকারের প্রশংসা ঘিরে বিতর্কের পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ১৮ ফেব্রুয়ারি থারুরকে দিল্লিতে ডেকেছিলেন। তবে বৈঠক নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি থারুর। তিনি বলেন, "রুদ্ধদ্বার আলোচনার বিষয়ে কিছু বলা ঠিক নয়। কেরালার বিধানসভা নির্বাচন বা রাজ্য নেতৃত্ব নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।"
কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন
কেরালায় দলের নেতৃত্বে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে থারুর বলেন, "নতুন ভোটারদের দলে আনা জরুরি। না হলে কেরালায় তৃতীয়বার বিরোধী আসনে বসতে হবে কংগ্রেসকে।" একাধিক মতামত জরিপে দেখা গেছে, কেরালায় কংগ্রেস সমর্থকদের প্রথম পছন্দ শশী থারুরই।
থারুরের বার্তা: দলের বাইরে দেশের স্বার্থও বড়
"আমি শুধু দলের স্বার্থে নয়, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কথা বলি," বলেন চারবারের তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ। ১৬ বছর ধরে কেরালার যুবকদের বেকারত্ব ও অভিবাসন সমস্যা নিয়ে সরব তিনি। থারুর মনে করেন, সরকারের নীতির ভালো দিকগুলোকে তুলে ধরা প্রয়োজন।
শশী থারুরের সাম্প্রতিক মন্তব্য কংগ্রেসের অন্দরমহলে জল্পনা তৈরি করলেও তিনি স্পষ্ট করেছেন— দলই তার প্রথম অগ্রাধিকার, তবে অবমূল্যায়ন হলে বিকল্পের কথা ভাবতে বাধ্য হবেন।