১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে বেশ কয়েকজন বিরোধী নেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তবে, সবার নজর কেড়ে নিয়েছেন শত্রুঘ্ন সিনহা। তিনি যে ছবি পোস্ট করেছেন, তা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে একটি ছবি পোস্ট করেছেন আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ। সেই ছবিতে শত্রুঘ্ন ও নরেন্দ্র মোদীকে একে অপরকে আলিঙ্গন করতে দেখা যাচ্ছে। ছবির ক্যাপশনে তৃণমূল সাংসদ লিখেছেন, 'একসময়কার বন্ধু সবসময় বন্ধুই থাকে, অবশ্যই!!!'
শত্রুঘ্ন আগে বিজেপি করতেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। রাজ্যের শাসদলে আসার পরে তিনি বহুবার কেন্দ্রীয় সরকার ও নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করেছেন। সৌজন্যের খাতিরে রাজনৈতিক নেতারা একে অপরকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানান। আবার নানা ইস্যুতে তীব্র আক্রমণ করেন একে অপরকে। এর মধ্যে নতুন কিছু নেই। কিন্তু, শত্রুঘ্ন যে ছবি পোস্ট করেছেন তাতে অন্য গন্ধ পাচ্ছেন রাজনৈতিক মহল।
১৯৮০ সালে শত্রুঘ্ন বিজেপিতে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৯২ সালে নয়াদিল্লি আসনে আরেক অভিনেতা রাজেশ খান্নার বিরুদ্ধে ভোটে লড়েন। যদিও রাজেশ খান্নার কাছে তিনি ২৫,০০০ ভোটে হেরে যান। এরপর শত্রুঘ্ন সিনহা ১৯৯৬ এবং ২০০২ সালে দুই মেয়াদে রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। তিনি অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারের অধীনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী (২০০২-০৩) এবং পরে জাহাজ পরিবহন মন্ত্রী (২০০৩-০৪) ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি নির্বাচনী রাজনীতিতে ফিরে আসেন, বিজেপির টিকিটে পাটনা সাহিব লোকসভা কেন্দ্র থেকে জেতেন। ২০১৪ সালে যখন নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সারা দেশে জয়লাভ করে, তখন শত্রুঘ্ন সিনহা কংগ্রেস প্রার্থী কুণাল সিংকে ১ লক্ষেরও বেশি ভোটে পরাজিত করে আসনটি ধরে রাখেন। ২০১৯ সালে তাঁর সঙ্গে বিজেপির দূরত্ব তৈরি হয়। নানা ইস্যুতে তিনি বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করতে থাকেন। সেই বছর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি তাঁকে আর প্রার্থী করেনি। পাটনা সাহেব আসনে প্রার্থী হন রবিশঙ্কর প্রসাদ।
টিকিট না পেয়ে বিজেপি ছাড়েন শত্রুঘ্ন। যার ফলে তিন দশকের দীর্ঘ সম্পর্কের অবসান ঘটে। তিনি কংগ্রেসের টিকিটে পাটনা সাহেব থেকে ভোটে লড়েন। কিন্তু রবিশঙ্কর প্রসাদের কাছে হেরে যান। ২০২২ সালে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। সেই সময় আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে যোগ দেন। উপনির্বাচনে আসানসোলে শত্রুঘ্নকে প্রার্থী করে তৃণমূল। ভোটে জিতে তিনি আবারও লোকসভায় যান।
এদিকে, জন্মদিনে নেন্দ্র মোদীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও। তিনি X-তে লিখেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজিকে শুভ জন্মদিন এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।' কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে লিখেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। তিনি সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু লাভ করুন।' এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার লিখেছেন, 'আপনার জন্মদিন উপলক্ষে আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা জানাচ্ছি। আপনার দক্ষ নির্দেশনায় আমাদের দেশের অব্যাহত অগ্রগতি কামনা করছি।'