দিল্লির মেহেরৌলি থানার একটি স্টোররুমে রাখা একটি ছোট বাক্সে শ্রদ্ধা ওয়াকারের মৃতদেহের অংশ। এই ঘটনা দেশের বিচারব্যবস্থায় ও সামাজিক জীবনে গভীর আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আফতাব পুনাওয়ালা শ্রদ্ধাকে হত্যার পর তাঁর মৃতদেহকে টুকরো-টুকরো করে ফ্রিজে রাখে। সেই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে প্রায় দুই বছর যাবৎ এই মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
শ্রদ্ধা ওয়াকার দেহের শেষকৃত্যের জন্য এখনও তাঁর বাবা বিকাশ ওয়াকার অপেক্ষা করছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, ১৮ মে ২০২২ সালে শ্রদ্ধাকে খুন করা হলেও, তাঁর মৃতদেহের প্রাথমিক অংশ কোনোভাবে শেষকৃত্যের জন্য বাড়িতে হস্তান্তর করা হয়নি। বরং, আফতাব পুনাওয়ালা তাঁর মৃতদেহকে ফ্রিজে কয়েক দিন ধরে সংরক্ষণ করে মেহেরৌলির জঙ্গলে ছুঁড়ে ফেলেন। পুলিশ ও আদালতের তদন্তে জানা গেছে, শারীরিক নমুনা ও ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে এই ব্যাপারে প্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে।
সাকেত কোর্ট, যা মেহেরৌলি থানার থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, গত ১ জুন, ২০২৩ থেকে শ্রদ্ধা ওয়াকার মামলার শুনানির সূচনা করেছে। তবে, মামলাটির বিচারিক প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীরগতির। বর্তমানে, মামলার ২১২ জন সম্ভাব্য সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ১৬৫ জন সাক্ষ্যের রেকর্ড সম্পন্ন হয়েছে, যার ফলে ৪৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ এখনও বাকি রয়েছে।
অতিরিক্তভাবে, মামলার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট থেকে রায় আসলেও, এই রায় হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করার সম্ভাবনা থাকায় মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তিতে আরও সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচারের জন্য এই মামলার দ্রুত সমাধান প্রত্যাশিত হলেও, মামলার জটিলতা ও প্রক্রিয়াগত বিলম্ব বাবার জন্য একটি দীর্ঘস্থায়ী কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিকাশ ওয়াকার, যিনি তাঁদের কন্যার শেষকৃত্যের জন্য বার বার আদালতে হাজির হচ্ছেন, তাঁদের উপর এই দীর্ঘায়িত বিচার প্রক্রিয়া ও অতিরিক্ত ভ্রমণের খরচ ও মানসিক ব্যথা বাড়িয়ে দিচ্ছে। পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থার পক্ষ থেকে এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাওয়া যায়নি, যার ফলে মামলার সমাধান কোন মেয়াদে সম্ভব হবে তা স্পষ্ট নয়।