১৮ দিনের মহাকাশযাত্রা শেষে সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরবেন ভারতের মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা ও তাঁর সহযাত্রী অ্যাক্সিওম মিশন-৪ (অ্যাক্স-৪)-এর তিন ক্রু সদস্য। স্পেসএক্সের ড্রাগন মহাকাশযান আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে গতকাল, ১৪ জুলাই আলাদা হয়। এবং ভারতীয় সময় দুপুর ৩টেয় ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো উপকূলে প্রশান্ত মহাসাগরে অবতরণ করবেন।
অবতরণের আগে ধারাবাহিক বেশ কিছু ধাপ—
দুপুর ২:০৭-এ ডিওরবিট বার্ন, ২:২৬-এ ট্রাঙ্ক জেটিসন, ২:৩০-এ নোসেকোন বন্ধ, ২:৫৭-এ ড্রগ প্যারাসুট এবং ২:৫৮-এ প্রধান প্যারাসুট। ঠিক ৩:০০-এ মহাকাশযানটি সমুদ্রে ‘স্প্ল্যাশডাউন’ করবে। অবতরণের সময় ড্রাগনের গতির কারণে এক সংক্ষিপ্ত সোনিক বুম সৃষ্টি হবে, যা সান দিয়েগো উপকূলে শোনা যেতে পারে এবং স্থানীয়দের মধ্যে রোমাঞ্চের সঞ্চার করতে পারে।
মিশন যাত্রা ও অর্জন
অ্যাক্স-৪ মিশন শুরু হয় ২৫ জুন, ২০২৫-এ। ২৬ জুন মহাকাশযানটি আইএসএস-এর সঙ্গে যুক্ত হয় এবং চার মহাকাশচারী, পেগি হুইটসন (কমান্ডার, নাসার অভিজ্ঞ মহাকাশচারী), শুভাংশু শুক্লা (পাইলট, ভারতের ইসরো মহাকাশচারী), স্লাওসজ উজনানস্কি-উইশনিউস্কি (পোল্যান্ডের ইএসএ মহাকাশচারী),
টিবোর কাপু (হাঙ্গেরির HUNOR প্রোগ্রামের মহাকাশচারী)
আইএসএস-এ ১৮ দিন ধরে ৬০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করেন। পেশী ক্ষয়, মানসিক স্বাস্থ্য এবং মহাকাশে ফসল ফলানোর গবেষণায় এই মিশন নতুন দিশা দেখিয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে শুভাংশু শুক্লার এই অবদান দেশকে গর্বিত করেছে।
মহাকাশে থাকাকালীন ক্রুরা তাদের ফটো সেশনকে স্মরণীয় করে তুলতে অভিনব উপায়ে ক্যামেরা সেট করেন, যা প্রতি পাঁচ সেকেন্ডে ছবি তোলে। শূন্য মাধ্যাকর্ষণে ভাসতে ভাসতে হাসিমুখে তোলা সেই ছবিগুলি তাদের মিশনের আনন্দঘন মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে থাকবে।
৭ দিনের আইসোলেশন ও পুনর্বাসন
পৃথিবীতে ফিরলেও এখনই স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন না শুভাংশু শুক্লা। চিকিৎসা তত্ত্বাবধানে তাঁকে ৭ দিনের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকতে হবে। মহাকাশে দীর্ঘ সময় থাকার পর শরীরের পেশী, হাড় এবং ভারসাম্য পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় নেয়। এই সাত দিন তাঁকে সম্পূর্ণ বিশ্রাম, শারীরিক পরীক্ষা এবং ধাপে ধাপে পুনরুদ্ধারের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
কখন ফিরবেন স্বাভাবিক জীবনে?
পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে, আগামী ২২ জুলাইয়ের পর শুভাংশু শুক্লা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন। মহাকাশযাত্রার এই অধ্যায় শুধু ভারতের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য এক নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে রইল।