ধস, নাগাড়ে বৃষ্টি, তিস্তার জলস্তর বৃষ্টি, সড়ক পথ বন্ধ হয়ে ফের দুর্যোগের কবলে সিকিম। লাচেন-লাচুংয়ের রাস্তা বিপর্যস্ত হয়ে আটকে পড়েছিলেন অসংখ্য পর্যটক। দুর্বিসহ হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি। এদিকে উদ্ধারকাজে যে সেনা সহায়, তাঁদেরই মিলিটারি ক্যাম্পে ধস নেমে ৩ জন নিহত হন। এখনও নিখোঁজ অনেকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঠাসা সিকিমে প্রকৃতিই যেন তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে।
তবে প্রশাসন সূত্রে খবর, আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় উদ্ধারকাজে গতি এসেছে। লাচুং-লাচেনের রাস্তায় যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করা গিয়েছে। উত্তর সিকিমের একাংশ থেকে আটকে পড়া প্রায় ১৬০০ পর্যটকদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
বাকি পর্যটকদেরও উপদ্রুত এলাকা থেকে সরিয়ে আনতে বিকল্প পথ এবং উপায় খুঁজছে প্রশাসনও। উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকায় রবিবার রাত পর্যন্ত ব্যাপক বৃষ্টি হলেও সোমবার সকালে অনেক জায়গাতেই রোদের দেখা মিলেছে। সোমবার প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১৮টি গাড়িতে ১০০-রও বেশি ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সিকিমের ধস কবলিত এলাকায় পৌঁছনোর জন্য ব্যবহার করেছে হেলিকপ্টারও।
মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে তিস্তার জলস্তরও বৃদ্ধি পেয়েছিল। এর ফলে সেখানকার বহু এলাকা বাকি ভূখণ্ডের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। উত্তর সিকিমের বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন এই পর্যটকরা। সিকিম সরকারের পক্ষ থেকে আগেই তাঁদের হোটেল এবং হোমস্টেতে থেকে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
আবহাওয়া খানিকটা অনুকূল হলেও উত্তর সিকিমের অনেক জায়গাতেই এখনও বিদ্যুতের সমস্যা রয়েছে। চুংথাঙে জলের সমস্যা রয়েছে।
এদিকে, গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে মণিপুরে। কার্যত বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উত্তর পূর্ব ভারতের এই রাজ্যে। দুর্ভোগে রাজ্যের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। মণিপুরের একাধিক নদীবাঁধ ভেঙে গিয়েছে। ফলে জনবসতি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জলস্তর বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে বেশিরভাগ নদীরই।
মণিপুরে এখনও পর্যন্ত ৩ হজার ৩৬৫টি ঘর ভেঙে পড়ছে। ১ হাজার ৫৯৯ মানুষ আশ্রয়হীন। নষ্ট হয়েছে ১১.৮ হেক্টর কৃষি জমি। রাজ্যের ৪৭টি এলাকায় ধস নেমেছে। তবে হতাহত কিংবা নিখোঁজের কোনও খবর এখনও মেলেনি।
৩৭টি ত্রাণ শিবিরের আয়োজন করেছে সরকার। ইম্ফলের পরিস্থিতি দুর্বিসহ। এখনও রাজধানী শহর সহ একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।