উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে এক তরুণীকে নির্মমভাবে গলা কেটে খুন করার অভিযোগে দু’জন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত তরুণীর নাম অঞ্জলি, যিনি লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন অভিযুক্ত মোহিত সাইনির সঙ্গে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর মৃতদেহ জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়।
হত্যার পেছনে লুকিয়ে থাকা সম্পর্কের জট
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত মোহিত সাইনি একজন বি.কম প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং ফুটবল খেলোয়াড়। গত দুই বছর ধরে অঞ্জলির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সম্প্রতি মোহিত জানতে পারেন যে অঞ্জলি বিবাহিত এবং তাঁর স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এই তথ্য জানার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন মোহিত।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, অঞ্জলি ও তাঁর স্বামী সাদ্দাম, দু’বছর আগে মোহিতের বাড়িতে ভাড়ায় থাকতে শুরু করেন। সাদ্দাম দিল্লির একটি হোটেলে কাজ করতেন এবং কাজের সূত্রে মাসের পর মাস বাড়িতে ফিরতেন না। এই সময় অঞ্জলি এবং মোহিতের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে সম্প্রতি অঞ্জলি আবার তাঁর স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন।
ওয়েব সিরিজ ‘মির্জাপুর’-এর প্রভাব
মোরাদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার কুমার আকাশ সিং জানিয়েছেন, অভিযুক্ত মোহিত ওয়েব সিরিজ ‘মির্জাপুর’ থেকে প্রভাবিত হয়ে অঞ্জলিকে খুনের পরিকল্পনা করেন। অঞ্জলিকে তাঁর স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করতে বললেও, বারবার ব্যর্থ হন মোহিত। এরপরই তিনি অঞ্জলিকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন।
হত্যাকাণ্ড এবং তদন্তের অগ্রগতি
গত ২৫ ডিসেম্বর অঞ্জলির মৃতদেহ জঙ্গলের মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, মোহিত তাঁর বন্ধু অঙ্কিত শর্মার সাহায্যে এই খুনের পরিকল্পনা করেন এবং তা কার্যকর করেন। হত্যার পর তাঁরা দু’জনই পালিয়ে যান। পরে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ চালায়।
জিজ্ঞাসাবাদে মোহিত জানিয়েছেন, অঞ্জলিকে হত্যা করার পর তিনি অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেছিলেন। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তরা ওয়েব সিরিজের অপরাধমূলক চিত্র দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
এই নৃশংস ঘটনার পেছনে প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা এবং ক্রোধের মিশ্রণ স্পষ্ট। পাশাপাশি ওয়েব সিরিজ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অপরাধ করার প্রবণতা একটি উদ্বেগজনক দিক তুলে ধরেছে। বর্তমানে দুই অভিযুক্ত জেলে রয়েছে, এবং পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। সমাজে এমন অপরাধ রোধে সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।