লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর দু'মাস যেতে না যেতেই বিরোধী ঐক্যে ফাটল! শুক্রবার কলকাতা থেকে দিল্লি রওনা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপলক্ষ, রবিবারের নীতি আয়োগের বৈঠক। যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের মমতা স্পষ্ট করে দিলেন, ওই বৈঠকে তিনি থাকবেন। রাজ্যের দাবিদাওয়া তুলে ধরবেন। সেই সঙ্গে এও জানালেন, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে। যার নির্যাস, কংগ্রেসি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক বয়কট করলেও বিরোধী শিবিরের দুই মুখ্যমন্ত্রী মমতা এবং হেমন্তকে দেখা যাবে নীতি আয়োগের বৈঠকে।
এ দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে নিয়ে কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,'আমি কিছুক্ষণ থাকব। কথা বলতে দিলে বলব। না হলে প্রতিবাদ করে বেরিয়ে আসব। চেষ্টা করব নিজের রাজ্যের হয়ে কথা বলার'। এরই সঙ্গে মমতা জানিয়ে দেন, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও থাকবেন নীতি আয়োগের বৈঠকে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জানান,'যত দূর জানি হেমন্তও (হেমন্ত সোরেন) যাচ্ছে। ও নিজের রাজ্যের কথা বলবে'।
কংগ্রেস ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, ২৭ জুলাইয়ের বৈঠকে তাদের কোনও মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন না। ওই বৈঠকে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা। নীতি আয়োগের বৈঠকে থাকবেন না পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা এবং হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা। এহেন পরিস্থিতিতে নীতি আয়োগের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন কিনা, তা নিয়ে ছিল জোর জল্পনা। অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীরা বয়কট করার পর মমতা কী অবস্থান তা নিয়ে আগ্রহ ছিল রাজধানীর রাজনীতিতেও। বৃহস্পতিবার কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোাল বলেছিলেন,'আমি মনে করি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্যান্য বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেবেন না'। আসলে, মমতা বৈঠকে যোগ দিলে বিরোধী ঐক্যে ভাঙন- এমন একটা ধারণা তৈরি হতে পারে।
লোকসভা ভোটে দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের নেতানেত্রীরা একসঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু রাজ্যে সেই ছবি দেখা যায়নি। পশ্চিমবঙ্গেই আলাদা আলাদা লড়াই করেছে বিরোধীরা। মমতার তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোট করেছিল বাম ও কংগ্রেস। এই দুই দলই আবার কেন্দ্রে ইন্ডিয়া জোটের সদস্য। নির্বাচনের আগে আসন বণ্টন নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে মমতার মতবিরোধও সর্বজনবিদিত। এবার নীতি আয়োগের বৈঠকেও কংগ্রেসের পথে হাঁটালেন না মমতা।