গোয়ার শিরগাঁওয়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। শ্রী লাইরাই 'যাত্রা' দেখতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু ৭ জনের। আহত কমপক্ষে ৩০ জন। আহতদের গোয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং মাপুসার গোয়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, গোয়ার এই ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় 'যাত্রা'-তে অংশগ্রহণ করেছিলেন বিপুল সংখ্যক ভক্ত। মাত্রাতিরিক্ত ভিড়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। পদপিষ্ট হন অনেকে। গুরুতর চোট পান একাধিক ভক্ত। শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় একাধিক। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
দুর্ঘটনার এই খবরে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ন্ত। তিনি নর্থ গোয়া জেলা হাসপাতালে পৌঁছন আহতদের দেখতে। তাঁদের চিকিৎসার বন্দোবস্ত নিয়ে খোঁজখবর নেন। পর্যাপ্ত ব্যবস্থার নির্দেশ দেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের।
কী এই শ্রী লাইরাই 'যাত্রা'?
লাইরাই হিন্দুদের এক আরাধ্যা দেবী। দক্ষিণ গোয়ার শিরোডা গ্রামে তিনি অত্যন্ত জাগ্রত দেবী হিসেবে পূজিতা হন। সেখানে লাইরাই দেবীকে উৎসর্গ করে তৈরি মন্দির আশপাশের গ্রামের ভক্তদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র একটি স্থান। লাইরাই দেবী 'যাত্রা'-কে শিরগাঁও 'যাত্রা' বলেও উল্লেখ করে থাকেন ভক্তরা। এটি গোয়ার একটি ধার্মিক উৎসব। যা প্রতিবছর শিরগাঁও গ্রামে পালন করা হয়।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা চৈত্র মাসে (মার্চ-এপ্রিল) লাইরাই দেবীর উপাসনা করেন। বেশ কয়েকদিন ধরে দেবীকে উৎসর্গ করে গোয়াতে চলে লাইরাই 'যাত্রা'। এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ আগুনের উপর দিয়ে হাঁটা। যেখানে ভক্তরা জ্বলন্ত কয়লার উপর দিয়ে খালি পায়ে হাঁটেন। যা তাঁদের ভক্তি, আধ্যাত্মিকতা এবং শুদ্ধতার প্রতীক।
জ্বলন্ত কয়লার উপর দিয়ে হাঁটার আগে ভক্তরা উপোস করেন। লাইরাই দেবীর কাছে প্রার্থনা করে মানসিক ভাবে আগুনের উপর দিয়ে খালি পায়ে হাঁটার জন্য প্রস্তুতি নেন। প্রতিবছর এই অনুষ্ঠানে একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রারও আয়োজন করা হয়। মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে, ঢোল-নাগাড়া বাজিয়ে চলে এই শোভাযাত্রা। হাজার হাজার ভক্ত জড়ো হন সেখানে।