
SIR-এর অতিরিক্ত কাজের চাপে একের পর এক BLO-র অসুস্থ হয়ে যাওয়া কিংবা আত্মহত্যার খবর পাওয়া গিয়েছে। এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠিও লিখেছিলেন নির্বাচন কমিশনকে। বুথ লেভেল অফিসারদের কাজের চাপ কমাতে এবার অতিরিক্ত স্টাফ নিয়োগ করতে বলল সুপ্রিম কোর্ট।
‘অ্যাডিশনাল স্টাফ’ কাজে লাগানো যেতে পারে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শুধু বাংলা নয়, BLO-দের মাত্রাতিরিক্ত কাজের চাপের অভিযোগ উঠেছে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, কেরল, তামিলনাড়ুতেও। আত্মহত্যার ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। সেই নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিল দেশের শীর্ষ আদালত।
প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে এদিন শুনানি হয়। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এই কাজে যাঁরা যুক্ত, কাজ শেষ করা তাঁদের ডিউটির মধ্যে পড়ে। তবে সেই কাজ করতে গিয়ে যদি তাঁরা কোনও রকম সমস্যায় পড়েন, রোজের ডিউটির সঙ্গে অতিরিক্ত কাজের চাপ পড়ে, সে ক্ষেত্রে SIR-এর কাজে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করা যেতে পারে।
শুনানিতে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জানান, প্রতি পোলিং বুথে ১২০০ ভোটার রয়েছে। BLO-কে ৩০ দিনের মধ্যে সর্বাধিক ১২০০ ফর্ম বিলি এবং সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এটা কি এমন চাপ? প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী। ইচ্ছাকৃত ভাবে এই চাপ তৈরির চেষ্টা চলছে বলেও দাবি তাঁর।
প্রধান বিচারপতি শক্তি কান্ত বলেন, 'প্রতিদিন ১০টি করে ফর্ম বিলি কি বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে?' তাঁকে আইনজীবী কপিল সিব্বল বলন, 'না, এটি প্রতিদিন ৪০টি করে দাঁড়াচ্ছে। এমন কোনও কোনও বিল্ডিং রয়েছে, যেখানে হয়তো ১০০ জনের বাস। সিঁড়িও নেই সেখানে। প্রতিটি ফ্লোরে গিয়ে গিয়ে ফর্ম বিলি করতে হচ্ছে বুথ লেভেল অফিসারদের।' পাল্টা নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী বলেন, '৭০ বছর বয়সে আমি এখনও সিঁড়ি চড়ি। এরা তো তরুণ কর্মী। রাজনৈতিক ভাবে দেখা হচ্ছে বিষয়টিকে।'
রাজনতিক দল তামিলাগা ভেত্তরি কাজ়হাগাম বা TVK একটি পিটিশন ফাইল করেছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে BLO-দের অতিরিক্ত কাজের চাপ, চাপ নিতে না পেরে আত্মহত্যার ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণ বলেন, ‘৩৫-৪০ জন BLO সুইসাইড করেছেন। তাঁরা কেউ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, কেউ শিক্ষক-শিক্ষিকা। সেকশন ৩২ ROPA নোটিস পাঠিয়ে BLO-দের বলা হচ্ছে, ডেডলাইন ছুঁতে না পারলে ২ বছরের জেল হতে পারে।'
সওয়াল জবাব পর্বে মাঝেই এই ইস্যুতে দেশের শীর্ষ আদালত জানায়, কেউ যদি নির্দিষ্ট কারণে সেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চান, কেস টু কেস বিচার করে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। BLO-দের কাজের সময় কমাতে অতিরিক্ত কর্মীকে কাজে লাগানোর কথা বলা হয় সুপ্রিম কোর্টের তরফে।