দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের আত্মহত্যা নিয়ে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। আত্মহত্যার মতো চরম পরিণতি থেকে যাতে পড়ুয়াদের রক্ষা করা যায়, তার জন্য বিশেষ গাইডলাইন দিল দেশের শীর্ষ আদালত। স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রশিক্ষণ শিবির, হস্টেলে আত্মহত্যার ঘটনা রুখতে একগুচ্ছ পদক্ষেপের কথা বলেছে আদালত।
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, বহু পড়ুয়াই পড়াশোনার চাপ, পরীক্ষার চাপ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতার অভাবের কারণে আত্মহননের মতো মারাত্মক পথ বেছে নিচ্ছেন, যা উদ্বেগের। সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইনে মানসিক স্বাস্থ্যে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
সূত্রের খবর, আদালত বলেছে, 'বিশেষ করে পরীক্ষার সময় ছাত্রছাত্রীদের পাশে থাকার জন্য ছোট ছোট ব্যাচে মেন্টর বা কাউন্সিলরকে দায়িত্ব দেওয়া হোক।' পাশাপাশি এ-ও বলা হয়েছে যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের বছরে অন্তত ২ বার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কর্মশালা করা হোক।
ব়্যাগিং, যৌন হেনস্থা বা অন্য কোনও অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে অভ্যন্তরীণ কমিটি গড়ার কথাও বলা হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সচেতনতার দিকেও জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। হস্টেল, ক্লাসরুমে স্যুইসাইড হেল্পলাইন নম্বর লেখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্যের ভিত্তিতে এহেন নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী ২০২২ সালে ১৩ হাজার ৪৪ জন পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছে। ২০০১ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ৫ হাজার ৪২৫। এনসিআরবি-র তথ্যানুযায়ী, পরীক্ষায় অসফল হয়ে ২ হাজার ২৪৮ জন পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছেন।
বিচারপতি বিক্রম নাথ ও বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ জানিয়েছে, পড়াশোনার চাপ, মানসিক চাপ থেকে পড়ুয়াদের রক্ষা করা জরুরি।
উল্লেখ্য, দেশে বহু নিট পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। অন্ধ্রপ্রদেশে ১৭ বছর বয়সী এক নিট পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর মামলার শুনানিতে গাইডলাইনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিশাখাপত্তনমে একটি কোচিং সেন্টারে ডাক্তারি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ওই ছাত্রী। ২০২৩ সালের ১৪ জুলাই তাঁর মৃত্যু হয়।