কাউকে পাকিস্তানি বললে তা শুনতে ভালো লাগে না। যে এই কথা বলে তার নিম্নরুচির পরিচয় পাওয়া যায়। তবে এটাকে অপরাধ বলে গণ্য করা যাবে না। পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। বিচারপতি পিভি নাগারাথনা ও সতীশ চন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চের এই পর্যবেক্ষণ সামনে আসে ৮০ বছরের এক ব্যক্তির ফৌজদারি মামলার প্রেক্ষিতে।
বিচারপতিরা জানান, 'মিঁঞা-টিঁঞা' এবং ‘পাকিস্তানি’ বলা কাম্য নয়। তবে তা ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ২৯৮ ধারা অনুযায়ী অপরাধ বলা যাবে না। এই যুক্তি দেখিয়ে মামলা খারিজও করে দেয় দেশের শীর্ষ আদালত।
হরিনন্দন সিং নামে ৮০ বছরের ওই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মহম্মদ শামিম-উদ্দিন নামে এক উর্দু অনুবাদক এবং সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্লার্কের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছিলেন তিনি। মহম্মদ শামিম-উদ্দিন তথ্যের অধিকার আইনে হরিনন্দর কাছে কিছু তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। অভিযোগ, হরিনন্দন প্রথমে সেই তথ্য দিতে অস্বীকার করেন। পরে সেই ব্যক্তিকে তাঁর ধর্মের কথা উল্লেখ করে অপমান করেন।
এরপর হরিনন্দন সিংয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় এফআইআর নথিভুক্ত করে পুলিশ। যার মধ্যে রয়েছে ধারা ২৯৮ (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত), ৫০৪ (শান্তি ভঙ্গের জন্য ইচ্ছাকৃত অবমাননা), ৫০৬ (অপরাধী ভীতিপ্রদর্শন), ৩৫৩ (সরকারি কর্মচারীকে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার জন্য হামলা বা অপরাধমূলক বল) এবং ৩২৩ নম্বর ধারা।
এরপর কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। আদালতের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা ইচ্ছাকৃতভাবে কারও ভাবাবেগে আঘাতের ধারা বাদ দেওয়া হলেও আরও নানা ধারায় মামলা চলতে থাকে। মামলা থেকে নিষ্কৃতি পেতে হাইকোর্টের দ্বারস্থও হন তিনি। তবে রেহাই মেলেনি। এরপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সেই ব্যক্তি।
এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, হরিনন্দনের বিরুদ্ধে কারও উপর বল প্রয়োগের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ওই ব্যক্তিকে আগেই মামলা থেকে মুক্তি দেওয়া উচিত ছিল হাইকোর্টের।