
তিন মাসে একবার করে তিনবার 'তালাক' শব্দটি উচ্চারণ করলেই বিবাহবিচ্ছেদ। মুসলিম সমাজে একে বলে তালাক-ই-হাসান। এই রীতির তীব্র নিন্দা করল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট তালাক-ই-হাসানের সামাজিক প্রভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। এই আধুনিক সমাজে কীকরে এই প্রথা চলতে পারে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতি সূর্য কান্ত, উজ্জ্বল ভুঁইয়া এবং এন কোটিশ্বর সিং-এর একটি বেঞ্চ তালাক-ই-হাসানের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারা এই চ্যালেঞ্জটি পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠাতে পারেন। যদিও তাঁরা স্পষ্ট করে দিয়েছেল, বিষয়টি কোনও ধর্মীয় অনুশীলনকে বাতিল করার বিষয়ে নয়। বরং এটি সাংবিধানিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা নিশ্চিত করা।
‘তালাক-ই-হাসান’ প্রক্রিয়ায় বিবাহবিচ্ছিন্না কিছু মুসলিম মহিলা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। তারা এই প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। অভিযোগ, তাঁদের স্বামী ‘তালাক-ই-হাসান’ প্রক্রিয়ায় তাঁদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। আইনজীবীর হাত দিয়ে বিচ্ছেদের নোটিস পাঠিয়েছেন। এর ফলে সন্তানের পড়াশোনা থেকে শুরু করে পাসপোর্ট, বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাঁদের।
এই রীতির পক্ষে লড়া এক আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘এটা কীরকম নিয়ম? ২০২৫ সালে এটা কী ভাবে চলতে পারে? আমরা যে ধর্মই অনুসরণ করি না কেন, এটা কি সমর্থন যায় কি? তা হলে নারীর মর্যাদা কীভাবে রক্ষা হবে? কোনও সভ্য আধুনিক সমাজে এই প্রথা চলতে পারে?’’ বেঞ্চ এটিকে নারীর মর্যাদার প্রতি অবমাননা বলে অভিহিত করেছে।
তালাক-ই-হাসান আইন অনুসারে, স্বামী তিন মাস ধরে মাসে একবার 'তালাক' উচ্চারণ করতে পারবেন। তৃতীয়বারের মতো তালাক ঘোষণার পর যদি দম্পতি আবার সহবাস শুরু না করে, তাহলে তালাক চূড়ান্ত হয়ে যায়। প্রথম বা দ্বিতীয় ঘোষণার পর পুনর্মিলন প্রক্রিয়াটিকে বাতিল করে দেয়। ২০১৭ সালে, আদালত ইতিমধ্যেই তিন তালাককে অসাংবিধানিক বলে বাতিল করে দিয়েছে।