পহেলগাঁও হামলার ঘটনা নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আর্জি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে মামলাকারীকে সতর্ক করে দেশের শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতি সশস্ত্র বাহিনীর মনোবল ভাঙা অনুচিত। বৃহস্পতিবার পহেলগাঁওয়ের ঘটনার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি এনকে সিংয়ের ডিভিশন বেঞ্চে।
সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, 'এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। প্রত্যেক ভারতীয় হাতে হাত রেখে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ফলে কোনওমতেই বাহিনীর মনোবলে আঘাত করা উচিত নয়। বিষয়টি সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখুন।'
কী আর্জি ছিল মামলাকারীর?
অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত বিচারবিভাগীয় কমিশনের মাধ্যমে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঘটনার তদন্ত হোক। এই আর্জি নিয়েই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। তবে আবেদন নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে দেশের শীর্ষ আদালত। এ দিন মামলাকারীর আইনজীবীকে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, 'আপনি কি এই পরিস্থিতিতে বাহিনীর মনোবন ভেঙে দিতে চাইছেন? এই ধরনের জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার আগে দয়া করে দায়িত্বশীল হন। দেশের প্রতিও আপনার কিছু কর্তব্য রয়েছে।' একইসঙ্গে বিচারপতিদের সংযোজন, 'আমরা কবে থেকে তদন্তের ক্ষমতা পেয়েছি? সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিরা কবে থেকে তদন্তে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছেন? বিচারপতিরা শুধুমাত্র মামলার নিষ্পত্তি করি।'
সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখ পড়ে শেষ পর্যন্ত মামলাকারীর আইনজীবী বৈসরণে জঙ্গি হামলার তদন্তের আর্জি জানিয়ে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা জানান।
অন্যদিকে, জম্মু-কাশ্মীরের বাইরে পঠনরত কাশ্মীরি পড়ুয়াদের জন্য নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার আর্জিও জানিয়েছিলেন মামলাকারী। তাঁর দাবি, পহেলগাঁও হামলার পর থেকে কাশ্মীরি পড়ুয়াদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, 'যে আবেদন আপনি করছেন, তা নিয়ে নিজে নিশ্চিত তো? প্রথমে একজন অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্তের আর্জি জানালেন। তাঁরা তদন্ত করতে পারেন না। এ বার প্রেস কাউন্সিলের জন্য গাইডলাইন চাইছেন। রাতভর এগুলো পড়তে বলে এ বার পড়ুয়াদের হয়ে কথা বলছেন? ' আদৌ কাশ্মীরি পড়ুয়াদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় থাকলে সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেছে দেশের শীর্ষ আদালত।
কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে নৃশংস হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্তভার দেওয়া হয়েছে NIA-কে।