লোকসভা নির্বাচনের আগে অস্বস্তি বাড়ল মোদী সরকারের। নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প বাতিল করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। নির্বাচনী বন্ড 'অসাংবিধানিক' বলে বৃহস্পতিবার বর্ণনা করল শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার এই মামলায় নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। অবিলম্বে নির্বাচনী বন্ড প্রদান বন্ধ করতে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই)-কে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
এদিন প্রধান বিচারপতি বলেছেন, 'অনুচ্ছেদ ১৯ (১) (এ)-কে লঙ্ঘন করছে নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প। এটি অসাংবিধানিক।' ২০১৯ সালে নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পের অন্তর্বর্তী নির্দেশ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলি যে সমস্ত বন্ড পেয়েছে, তার রেকর্ড বিশদে নির্বাচন কমিশনকে দিতে এসবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে কমিশনকে তথ্য দিতে হবে এসবিআইকে। ব্যাঙ্কের থেকে তথ্য পেলে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করতে কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভোটে কালো টাকার খেলা বন্ধ করার লক্ষ্যে নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল মোদী সরকার। ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন সেই সময় নির্বাচনী বন্ডের কথা ঘোষণা করেছিলেন অরুণ জেটলি। ২০১৭ সালে অর্থ বিলের মাধ্যমে আইনে বেশ কিছু সংশোধনী এনে ২০১৮ সালে নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদান দিতে চাইলে বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দিতে হবে। ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকা মূল্যের বন্ড পাওয়া যাবে। নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে সেই বন্ড ভাঙিয়ে নিতে পারবে রাজনৈতিক দলগুলি। তবে কে, কত টাকা দিচ্ছেন, তা বোঝা যাবে না। নির্বাচনী বন্ডে অস্বচ্ছ্বতা নিয়ে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। বন্ড-বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, বিশ্বের কোনও দেশে এমন ব্যবস্থা নেই। কোন কর্পোরেট সংস্থা ভোটে কাকে সাহায্য করছে, তার বিনিময়ে ক্ষমতাসীন দলের থেকে কী সুবিধা আদায় করছে, তা জানার কোনও উপায় নেই।