পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা ও ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সোমবার লোকসভায় চলা আলোচনায় উত্তাল হয়ে উঠল সংসদ। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যের মাঝে বিরোধীরা একের পর এক প্রশ্ন তুললেন সরকারের গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে। তারই মাঝে বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এল তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্য।
তাঁর বক্তব্যে তিনি পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ‘আজাদ কাশ্মীর’ এবং ‘পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীর’ বলে উল্লেখ করেন। আর তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিজেপি। দলের আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূলকে। তাঁর কথায়, 'পাকিস্তান আজ তৃণমূল কংগ্রেসের সৌজন্যে উদযাপন করছে। তৃণমূল যেন পাকিস্তানের এক অদ্ভুত মিত্রে পরিণত হয়েছে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যা বললেন, তা কেবল ভিন্নমত নয়, এটা লজ্জাজনক এবং ভারতের সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থার অপমান।'
তিনি আরও অভিযোগ করেন, 'একজন ভারতীয় সাংসদ সংসদের ভেতরে দাঁড়িয়ে ১) পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরকে আজাদ কাশ্মীর বললেন, ২) আমাদের বীর জওয়ানদের বীরত্ব নিয়ে কটাক্ষ করলেন, এবং ৩) সন্ত্রাসী হামলাকে রসিকতার উপাদানে পরিণত করলেন। এই আচরণ কি ভারতীয় সংসদের মান বজায় রাখে?'
কল্যাণের অবস্থান
তবে লোকসভায় তাঁর বক্তব্যে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'আমি সরকারের পক্ষে বলতে চাই, অপারেশন সিঁদুরে যেভাবে বেসামরিক নাগরিকদের উপর আক্রমণ করা হয়নি, তা প্রশংসাযোগ্য। আমি এই কৌশলের প্রশংসা করছি।' পাশাপাশি তিনি বলেন, 'পাকিস্তান ভারতের রাফায়েল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে বলে যে দাবি করেছে, তার কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই।'
কংগ্রেসের প্রশ্নবাণ
এই বিতর্কের মাঝে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈও কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, পহেলগামে হামলার আগে-পরে পাঁচ সন্ত্রাসীর অবস্থান কীভাবে অজানা রইল? তিনি আরও বলেন, 'সরকার একদিকে নিজেদের সাফল্য প্রচার করে, অন্যদিকে হামলার দায় এড়াতে গোয়েন্দা ব্যর্থতা গোপন রাখে।'
রাজনৈতিক তরজা চরমে
তৃণমূলের বক্তব্যের পর বিজেপি যেন নতুন করে রাজনীতির অস্ত্র খুঁজে পেয়েছে। অমিত মালব্য বলেন, 'তৃণমূল ভারতের কণ্ঠস্বর নয়, পাকিস্তানের প্রচারমাধ্যমে পরিণত হয়েছে।'