দেশের বিচারব্যবস্থার উপর প্রভাব খাটাচ্ছে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী। বিচারব্যবস্থাকে তারা দুর্বল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনই গুরুতর অভিযোগ জানিয়ে দেশের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়েছেন ভারতে ৬০০-রও বেশি আইনজীবী। এবার আইনজীবীদের ওই চিঠি নিয়ে কংগ্রেসকেই নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। মোদীর কটাক্ষ, 'এটা কংগ্রেসের পুরনো সংস্কৃতি'।
একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী আদালতের রায়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে চলেছে
আজ অর্থাত্ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধানবিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে (CJI DY Chandrachud) একটি চিঠি দিয়েছেন প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল হরিশ সালভে, বিশিষ্ট আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ সহ ৬০০-রও বেশি আইনজীবী। চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী আদালতের রায়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে চলেছে। বিচারব্যবস্থার উপর প্রভাব খাটাচ্ছে। বিশেষ করে সেই সব মামলায়, যেখানে কোনও বড় নেতা জড়িত অথবা দুর্নীতির অভিযোগের মামলা। এই ধরনের গতিবিধি দেশের বিচারব্যবস্থার উপর মানুষের বিশ্বাসে আঘাত হানতে পারে। বিচারব্যবস্থার জন্য বিপজ্জনক। ৬০০-রও বেশি আইনজীবীক যে চিঠি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধানবিচারপতিকে, সেই তালিকায় হরিশ সালভে, মনন কুমার মিশ্র, আদিশ আগরওয়াল, চেতন মিত্তল, পিঙ্কি আনন্দ, দীনেশ জৈন, উজ্জ্বলা পাওয়ার, স্বরূপমা চতুর্বেদীর মতো দেশের তাবড় আইনজীবীরা রয়েছেন।
কংগ্রেসের এটা পুরনো সংস্কৃতি
আইনজীবীদের এই অভিযোগ সম্বলিত চিঠির প্রেক্ষিতে কংগ্রেসকেই কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী। X হ্যান্ডেলে মোদী লিখলেন, 'অন্যদের চোখ রাঙানো এবং ধমক দেওয়া কংগ্রেসের পুরনো সংস্কৃতি। ৫ দশক আগে তারা নিজেরাই একটি 'প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিচার বিভাগ'-এর জন্য আহ্বান জানিয়েছিল । ওরা নির্লজ্জভাবে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য অন্যদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি চায় কিন্তু জাতির প্রতি কোনও অঙ্গীকার থেকে বিরত থাকে। অবাক হওয়ার কিছু নেই, ১৪০ কোটি ভারতীয় তাদের প্রত্যাখ্যান করছে।'
ঠিক কী কী লিখেছেন আইনজীবীরা?
দেশের ৬০০-রও বেশি আইনজীবী চিঠিতে লিখছেন, একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বিচারব্যবস্থার কাজকর্মে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিচারব্যবস্থার স্বর্ণযুগ চলছে, এরকম একটি মিথ্যে ন্যারেটিভ চালানো হচ্ছে। আসলে আদালতের কাজকর্মে প্রভাব খাটানো, প্রশ্ন তোলা বিচারব্যবস্থার উপর বিশ্বাস কমানোর সামিল। ওই নির্দিষ্ট গোষ্ঠী রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডার ভিত্তিতে আদালতের রায়ের প্রশংসা অথবা নিন্দা করে। আসলে এই গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য 'মাই ওয়ে বা হাইওয়ে'। একই সঙ্গে বেঞ্চ ফিক্সিংয়ের থিওরিও ওই গোষ্ঠীরই তৈরি।
আইনজীবীদের অভিযোগ, আশ্চর্যের বিষয় হল, কোনও নেতা কারও বিরুদ্ধে প্রথমে দুর্নীতির অভিযোগ আনছেন। তারপর আদালতে সেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকেই বাঁচাচ্ছে সংশ্লিষ্ট নেতা। এহেন পরিস্থিতিতে আদালতের রায় যদি ওই নেতার পছন্দ না হয়, তখনই আদালতের মধ্যে কিংবা মিডিয়ার মাধ্যমে রায়ের সমালোচনা শুরু করে দিচ্ছেন। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কিছু নির্দিষ্ট মামলায় রায় নিজেদের পক্ষে করানোর জন্য বিচারপতিদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যে ছড়ানো শুরু হয়ে যাচ্ছে। বিচারব্যবস্থার উপর এই রকম প্রভাব খাটানো যেকোনও পরিস্থিতিতেই অসহনীয়।