পথকুকুর নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক অব্যাহত। রায় বদল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এরই মাঝে কুকুরের হামলায় ক্ষতবিক্ষত হলেন উত্তরপ্রদেশের কানপুরের এক কলেজছাত্রী। মুখে ১৭টি সেলাই পড়েছে ওই তরুণীর। ঘটনা ঘিরে তীব্র শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়।
ঘটনাটি গত ২০ অগাস্টের। জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো সেদিনও কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন বৈষ্ণবী সাউ। তিনি BBA-র ছাত্রী। আচমকাই রাস্তায় কয়েকটি কুকুরকে বাঁদরের দলের তাড়া খেতে দেখেন তিনি। কোনও মতে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময়ে ৩টি কুকুর ঝাঁপিয়ে পড়ে বৈষ্ণবীর গায়ে। ঘটনার আকস্মিকতায় রাস্তায় পড়ে যান তিনি। কিছুতেই কুকুরদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেননি। তাঁর চোখে, মুখে, শরীরের নানা অংশে ততক্ষণে কামড় বসিয়ে দিয়েছে কুকুর ৩টি।
কুকুরের হামলার মুখে পড়ে চিৎকার করতে থাকেন ওই কলেজছাত্রী। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন কয়েকজন পথচারী। কুকুরগুলিকে তাড়িয়ে বৈষ্ণবীকে উদ্ধার করেন তারা। খবর দেওয়া হয় পরিবারকে। ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, বৈষ্ণবীর গালের ডান দিকে কামড় বসিয়ে দিয়েছে কুকুর। ক্ষত এতটাই গভীর ছিল, গাল চিরে গিয়েছে। বৈষ্ণবীর নাক এবং শরীরের একাধিক জায়গাতেও কামড়ের দাগ রয়েছে। ১৭টি সেলাই পড়েছে তাঁর।
তরুণীর কাকা আশুতোষ সাউ বলেন, 'কলেজ থেকে ফেরার পথে ভাইঝিকে কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করে কয়েকটি কুকুর। তার গালে গভীর ক্ষত। ১৭টি সেলাই পড়েছে। শরীরের আরও নানা অংশে কুকুর কামড়েছে।'
এদিকে, পথকুকুরদের নিয়ে পূর্বের রায় বদল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে নির্দেশ দিয়েছিল, দিল্লির সব পথকুকুরকে শেল্টারে রাখতে হবে। এরপরেই গোটা দেশজুড়ে পশুপ্রেমীরা আন্দোলন শুরু করেন। তীব্র বিরোধিতার মধ্যে শুক্রবার দেশের প্রধানবিচারপতি বি আর গবই ওই রায় পরিমার্জন করেন। পথকুকুরদের নির্বীজকরণ, টিকা দেওয়া ও ডি-ওয়ার্মিংয়ের (প্যারাসাইট দূর করার ওষুধ) পর আবার তাদের সেই একই এলাকায় ফিরিয়ে দিতে হবে। আগে বলা হয়েছিল কুকুরদের রাস্তায় ছাড়া যাবে না, কিন্তু নতুন নির্দেশে তা বদলানো হয়েছে। তবে শর্তও রয়েছে। যদি কোনও কুকুর জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয় বা অতি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে, তাহলে তাকে আর রাস্তায় ছাড়া যাবে না। তাদের জন্য আলাদা আশ্রয়কেন্দ্র বা শেল্টারের ব্যবস্থা করতে হবে।