
ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতৃত্ব আগামী বছরের ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে পারেন। সূত্রের খবর, ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি আন্তোনিও কস্তা সহ একাধিক ইইউ নেতা ২৬ জানুয়ারির অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময়ে নয়াদিল্লিতে ভারত-ইইউ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথাও রয়েছে, যা দুই পক্ষের সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এই শীর্ষ সম্মেলনে মূলত ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা প্রাধান্য পাবে। বাণিজ্য সচিব রাজেশ আগরওয়াল আগেই জানিয়েছিলেন, এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা একাধিক অধ্যায়ে এগিয়ে চলেছে। যদিও বছরের শেষের মধ্যেই চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আশা করা হচ্ছিল, তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে নির্দিষ্ট সময়সীমার চাপে পড়ে কোনও চুক্তি করা হবে না।
রাজেশ আগরওয়াল বলেন, 'সব বিষয়েই গভীরভাবে আলোচনা চলছে এবং উভয় পক্ষই নিজেদের মধ্যে পার্থক্য কমিয়ে আনতে কাজ করছে। চুক্তিটি সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সরাসরি ও ভার্চুয়াল-দুই ধরনের বৈঠকই নিয়মিত হচ্ছে।' তাঁর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, আলোচনা ইতিবাচক পথে এগোলেও এখনও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছনো বাকি।
এখনও পর্যন্ত ভারত ও ইইউর মধ্যে এফটিএ নিয়ে ১৪ দফা আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ৩ থেকে ৯ ডিসেম্বর ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি আলোচক দল নয়াদিল্লি সফর করে। সফরের শেষদিকে, ৮ ও ৯ ডিসেম্বর বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে ইইউর বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিষয়ক কমিশনার মারোস সেফকোভিচের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়।
এর আগে, ৭ ডিসেম্বর বাণিজ্য সচিব রাজেশ আগরওয়াল এবং ইউরোপীয় কমিশনের বাণিজ্য মহাপরিচালকের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই আলোচনার পরই গোয়েল ও সেফকোভিচের সাক্ষাৎ হয়, যা এফটিএ আলোচনাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে, প্রজাতন্ত্র দিবসে ইইউ নেতাদের সম্ভাব্য উপস্থিতি এবং একই সময়ে শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন, এই দুই বিষয়ই ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হলে, তা দু’পক্ষের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সহযোগিতাকে আরও গভীর করবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।