সীতারাম ইয়েচুরির জীবনাবসান। বয়স হয়েছিল ৭২। দীর্ঘ কয়েকদিন ধরেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক। দিল্লির এমস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ইয়েচুরি। বৃহস্পতিবার হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, মাল্টি-অর্গান ফেলিওরের কারণে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
এক্স হ্যান্ডলে সিপিএমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টে ৩ মিনিটে প্রয়াত হন ইয়েচুরি।
গত মাস থেকে দিল্লির এমস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক। সিপিএমের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল যে, হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করানো হয়েছিল ইয়েচুরিকে। শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাঁকে রেসপিরেটরি সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। এক্স হ্যান্ডলে সিপিএমের তরফে আরও জানানো হয়েছিল যে, চিকিৎসকদের একটি দল সীতারামকে সর্বক্ষণ পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন। গত ১৯ অগাস্ট এমসে ভর্তি করানো হয় ইয়েচুরিকে। সেই সময় তাঁর জ্বর ছিল। জ্বরের মাত্রা অনেকটাই বেশি ছিল। সম্প্রতি ইয়েচুরির ছানি অস্ত্রোপচারও করানো হয়েছিল।
গত মাসে প্রয়াত হন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। গত ২২ অগাস্ট বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মরণসভায় কলকাতায় যোগ দিতে পারেননি সীতারাম। হাসপাতাল থেকেই একটি ভিডিয়ো বার্তা পাঠিয়েছিলেন তিনি। তার আগে ছানি অস্ত্রোপচারের আগে বুদ্ধদেবের শেষযাত্রাতেও থাকতে পারেননি ইয়েচুরি।
১৯৫২ সালের ১২ অগাস্ট জন্ম সীতারামের। ১৯৯২ সাল থেকে সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন ইয়েচুরি।
মাদ্রাজে তেলুগুভাষি পরিবারে জন্ম ইয়েচুরির। তাঁর বড় হয়ে ওঠা হায়দরাবাদে। ১৯৭৪ সালে এসএফআই-এ যোগ দেন ইয়েচুরি। এক বছর পর যোগ দেন সিপিএমে। ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময় গ্রেফতার করা হয়েছিল ইয়েচুরিকে। সেই সময় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন তিনি। ১৯৭৮ সালে এসএফআই-এর অল ইন্ডিয়া জয়েন্ট সেক্রেটারি পদে নির্বাচিত হন ইয়েচুরি। কেরল এবং বাংলার বাইরের কেউ হিসাবে সীতারামই প্রথম এসএফআই-এর প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। ১৯৮৪ সালে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নির্বাচিত হন তিনি।
সীতারামের প্রয়াণে শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে। শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, 'জাতীয় রাজনীতিতে বড় ক্ষতি।'
শোকপ্রকাশ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।