রং আর তুলি দিয়ে যেন অঙ্ক, পুরাণ ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলে কিশোর শিল্পী অখিল আনন্দ। বয়স মাত্র ১৪। চেন্নাইয়ের এই চিত্রশিল্পীর তৈরি হচ্ছে তার প্রথম সোলো এক্সিবিশনের জন্য। প্রদর্শনীর নাম রাখা হয়েছে, 'মর্ফোজেনেসিস'। যেখানে মিলবে ফিবোনাচ্চি স্পাইরাল, ভারতীয় মন্দিরের মোটিফ এবং ইসলামিক জিওমেট্রি।
অখিলের সৃজনশীলতা অত্যন্ত উচ্চমানের এবং বহুমাত্রিক। ৯ বছর বয়স থেকে সে শিখছে শিল্পী ডায়না সতীশের কাছে। পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছে অখিল। এই বয়সেই সে তৈরি করেছে 'হস্ত'। যা হল 'হার্ট অফ ম্যাথ' এবং তার হাত ধরেই জন্ম নিয়েছে 'অখিলিজম'। যা নকশার একটি অন্যরকম ভাষা।
আঁকার পাশাপাশি বেড়ানো, স্টার ওয়ার সিনেমা দেখে আনন্দ পায় অখিল আনন্দ। পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দাবাড়ু বিশ্বনাথ আনন্দের ছেলে অখিল বাবার সঙ্গেই সময় কাটাতে ভালবাসে।
ইন্ডিয়া টুডে-র সঙ্গে কথোপকথনে এই তরুণ শিল্পীর নানা অজানা দিক উঠে এল।
আর্টে তার অনুপ্রেরণা কে?
অখিল বলে, 'মহামারীর সময় থেকে আমার ফিবনাচ্চি আর্টে আগ্রহ জন্মায়। এরপর ধীরে ধীরেশিখি ইসলামিক আর্ট। ভারতের নানা মন্দির এবং স্থাপত্য আঁকতে শুরু করেছিলাম। তখন বুঝলাম, সমস্ত কিছুর মধ্যেই অসম্ভব মিল রয়েছে।'
ডায়না সতীশের থেকে শেখা কোন বিষয়গুলি মজ্জায় ঢুকে গিয়েছে?
অখিলের কথায়, '২০২২ সালে পিংলা গ্রামে গিয়েছিলাম। প্রকৃতি থেকেই আঁকার বিষয়বস্তু খুঁজে নিয়েছিলাম।'
সমাজের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে শিল্পীদের ভূমিকা কী হওয়া উচিত?
অখিল বলে, 'ভারতের সংবিধানের উই দ্য পিপল কথাটা আমার খুব ভাল লাগে। আমরা সকলে এক, স্কুল হোক বা শপিং মল। আর্টও ঠিক তেমনই মানুষকে এক করে। ভাল কিংবা মন্দতে আর্ট মানুষকে এক জায়গায় নিয়ে আসে।'
অঙ্কের প্রতি ভালবাসা কীভাবে চিত্রশিল্পে ফুটে উঠল?
বিশ্বনাথ আনন্দ পুত্র বলে, 'আমি চিত্র বুনতে ভালবাসি। প্রথম প্রথম আঁকা কঠিন লাগত। তারপর ধীরে ধীরে ভালবাসা তৈরি হল। যেভাবে এক একটি প্যাটার্ন আমার ভাবনাগুলিকে বাস্তবায়িত করে, তা আমার ভাললাগে। গণেশের মূর্তি আঁকলে আমি কোথাও না কোথাও একটি স্পাইরাল প্যাটার্ন ব্যবহার করি। অঙ্কের থেকেই অঙ্ককে চাক্ষুস করতে বেশি পছন্দ করি।'
অল্প বয়সে এত সম্মান দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়?
অখিলের আঁকা কেউ কিনলে অথবা প্রশংসা করলে ভাললাগে তাঁর। প্রদর্শনী তার উৎসাহ বাড়ায়।
বাবা গ্লোবাল আইকন, বিষয়টি অনুপ্রেরণা জোগায় না বাড়তি চাপ তৈরি করে?
অখিলের কথায়, 'আপ্পা কখনও পরামর্শ দেয় না। কিন্তু কখনও কোনও আঁকা নষ্ট হয়ে গেলে আপ্পা আমায় হাঁটতে নিয়ে যান। বোঝান তিনি যখন ভুল করতেন এবং সেখান থেকে শিখতেন। নিজের টুর্নামেন্টগুলির অভিজ্ঞতা আমার সঙ্গে শেয়ার করেন। আপ্পাকে জিততে দেখতে আমারও ভাললাগে। আপ্পার সঙ্গে আমি স্টার ওয়ার আর ব্যাটম্যান দেখেন। আমায় আঁকা এনজয় করতে বলে আপ্পা। সাহস জোগান প্যাশন ফলো করতে।'