Advertisement

Waqf Amendment Act: ওয়াকফ আইন রুখতে আইনি লড়াই আজ শুরু, সুপ্রিম কোর্টে ৭৩টি মামলা

ওয়াকফ একটি ইসলামিক ধর্মীয় ব্যবস্থা, যেখানে কোনও মুসলমান ব্যক্তি তাঁর সম্পত্তি—জমি, বাড়ি, দোকান বা অন্যান্য সম্পদ—চিরতরে ধর্মীয় বা জনকল্যাণমূলক কাজে দান করে দেন। এই সম্পত্তি পরিচালনার জন্য গঠিত হয় ওয়াকফ বোর্ড।

ওয়াকফ আইনের বিরোধিতা -- পিটিআই ফাইল ছবিওয়াকফ আইনের বিরোধিতা -- পিটিআই ফাইল ছবি
Aajtak Bangla
  • নয়াদিল্লি,
  • 16 Apr 2025,
  • अपडेटेड 8:59 AM IST
  • নতুন আইনে কী কী পরিবর্তন করা হয়েছে?
  • আজ কী হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে?
  • প্রথম দফায় ১০টি মামলার শুনানি

ওয়াকফ (Waqf) আইনে সম্প্রতি সংশোধনের পর থেকেই দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে এবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দরজায় কড়া নাড়ল ৭৩টি পৃথক মামলা। আজ অর্থাত্‍ বুধবার থেকে এই মামলাগুলির শুনানি শুরু করল সুপ্রিম কোর্ট। আজ প্রথম দফায় ১০টি মামলার শুনানি করবে বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ।

এই আইনের বিরুদ্ধে যেমন রাজনৈতিক দল ও মুসলিম সংগঠনগুলি মুখ খুলেছে, তেমনই হিন্দু সমাজের পক্ষ থেকেও কয়েকটি মামলায় আইনটির বিরোধিতা করা হয়েছে। অন্যদিকে, কেন্দ্র সরকার সহ মোট ৭টি রাজ্য এই সংশোধিত আইনের পক্ষে আদালতে সওয়াল করেছে।

ওয়াকফ আইন কী?

ওয়াকফ একটি ইসলামিক ধর্মীয় ব্যবস্থা, যেখানে কোনও মুসলমান ব্যক্তি তাঁর সম্পত্তি—জমি, বাড়ি, দোকান বা অন্যান্য সম্পদ—চিরতরে ধর্মীয় বা জনকল্যাণমূলক কাজে দান করে দেন। এই সম্পত্তি পরিচালনার জন্য গঠিত হয় ওয়াকফ বোর্ড। ভারতে রাজ্যভিত্তিক ওয়াকফ বোর্ড রয়েছে, যারা এই সম্পত্তিগুলির দেখভাল করে। ভারতের ওয়াকফ আইন প্রথম চালু হয় ১৯৫৪ সালে, এরপর ১৯৯৫ সালে নতুন আইন প্রণীত হয়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার এই আইনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন এনেছে, যেগুলি ঘিরেই শুরু হয়েছে বর্তমান বিতর্ক।

নতুন আইনে কী কী পরিবর্তন করা হয়েছে?

১. ওয়াকফ বোর্ডে অ-মুসলিম সদস্য নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে, যা মুসলিম সমাজের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

২. ওয়াকফ বোর্ডের নির্বাচনী কাঠামো বাতিল করে সরকার মনোনীত প্রতিনিধিদের নিয়োগের রাস্তায় হেঁটেছে।

৩. ‘ওয়াকফ বাই ইউসেজ’—অর্থাৎ দীর্ঘদিনের ব্যবহারজনীত কারণে ওয়াকফ সম্পত্তি বলে ধরে নেওয়ার ধারা বাতিল করা হয়েছে।

৪. ওয়াকফ সম্পত্তির উপরে সরকারের হস্তক্ষেপের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। এতে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, সরকার মনোমতো এই সম্পত্তিগুলি দখল করতে পারে।

কেন উঠছে বিরোধের সুর?

মামলাকারীদের মতে, এই সংশোধিত আইন মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অধিকার খর্ব করছে। এছাড়া, বহু পুরনো ওয়াকফ সম্পত্তি, যেগুলি লিখিত নথি ছাড়া মুখে-মুখে দান করা হয়েছিল, সেগুলি এখন অবৈধ হয়ে পড়তে পারে। এমনকী, কিছু ক্ষেত্রে সরকারি জমিকে ওয়াকফ হিসেবে ঘোষণা করে দখল করার আশঙ্কাও প্রকাশ পেয়েছে। হিন্দু পক্ষের কিছু মামলায় দাবি করা হয়েছে, ওয়াকফ আইন ব্যবহৃত হয়ে হিন্দু মন্দির বা দেবোত্তর সম্পত্তিতে অবৈধ দখলের আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement

কে কার পক্ষে?

এই আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিআই, AAP, AIMIM সহ একাধিক রাজনৈতিক দল। দক্ষিণী তারকা বিজয়ের দল টিভিকে (TVK) এবং YSR কংগ্রেসও মামলায় যুক্ত হয়েছে। এছাড়া অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড, জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ এবং সামাস্থ কেরালা জামিয়াথুল উলেমার মতো ধর্মীয় সংগঠনগুলিও আইনের বিরোধিতা করেছে। অন্যদিকে, কেন্দ্র সরকার সহ সাতটি রাজ্য এই আইনকে সমর্থন করেছে। তাদের দাবি, ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনতেই এই সংশোধন জরুরি।

আজ কী হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে?

আজ দুপুর ২টোর পর ১০টি মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। শুনানি চলবে তিন সদস্যের বেঞ্চে। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই 'কেভিয়েট' (Caveat) দাখিল করেছে, অর্থাৎ আদালত যেন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাদের কথা শুনে। এই আইনি লড়াই দীর্ঘদিন চলবে বলেই অনুমান, এবং এর রায় শুধু একটি সম্প্রদায় নয়, দেশের সামগ্রিক ধর্মীয় সম্পত্তির ভবিষ্যতের দিকও নির্ধারণ করতে পারে।

Read more!
Advertisement
Advertisement