Advertisement

Dunki Route: ভয়াবহ 'ডাঙ্কি রুট' দিয়েই আমেরিকায় অবৈধ্য় প্রবেশ ভারতীয়দের, রুটটি কীরকম?

সামরিক বিমানে চড়িয়ে বেআইনি অভিবাসীদের ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্তত ১০৪ জন ভারতীয়কে নিয়ে বিমান বুধবারই পঞ্জাবের অমৃতসরে নামে। বেআইনি ভাবে আমেরিকায় যাওয়া ও বসবাস করা ওই ভারতীয়দের হাতকড়া পরিয়ে ফেরানো হয়েছে।

 ভয়াবহ 'ডাঙ্কি রুট' দিয়েই আমেরিকায় অবৈধ্য় প্রবেশ ভারতীয়দের, রুটটি কীরকম? ভয়াবহ 'ডাঙ্কি রুট' দিয়েই আমেরিকায় অবৈধ্য় প্রবেশ ভারতীয়দের, রুটটি কীরকম?
Aajtak Bangla
  • নতুন দিল্লি,
  • 06 Feb 2025,
  • अपडेटेड 7:25 PM IST
  • 'ডাঙ্কি' শব্দটি, পঞ্জাবি বাগধারা থেকে উদ্ভূত
  • যার অর্থ 'স্থান থেকে অন্য জায়গায় হাঁটা'

সামরিক বিমানে চড়িয়ে বেআইনি অভিবাসীদের ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্তত ১০৪ জন ভারতীয়কে নিয়ে বিমান বুধবারই পঞ্জাবের অমৃতসরে নামে। বেআইনি ভাবে আমেরিকায় যাওয়া ও বসবাস করা ওই ভারতীয়দের হাতকড়া পরিয়ে ফেরানো হয়েছে। কিন্ত এখন প্রশ্ন, এই ভারতীয়রা কীভাবে আমেরিকায় পৌঁছলেন? মাঝে কোন কোন দেশে যেতে হয়েছিল? এর জন্য কত টাকা খরচ করতে হয়েছিল? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরা কয়েকজন ভারতীয় সে সবই শেয়ার করেছেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।

আমেরিকা থেকে ফেরা ১০৪ জন ভারতীয়দের মধ্যে হরিয়ানার ৩৩ জন, গুজরাটের ৩৩ জন, পঞ্জাবের ৩০ জন, মহারাষ্ট্রের ৩ জন, উত্তরপ্রদেশের ৩ জন এবং চণ্ডীগড় থেকে ২ জন। এদের মধ্যে ১৯ জন মহিলা এবং ১৩ জন নাবালক। একটি ৪ বছরের শিশুও রয়েছে এই তালিকায়। অনেক নির্বাসিত ব্যক্তি কয়েক মিনিট আগে পর্যন্ত অবগত ছিলেন না যে তাঁদের ভারতে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

এক নির্বাসিত জসপাল বলেছেন যে তিনি একজন এজেন্টকে ৩০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন, যিনি তাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইনি ভাবে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। যদিও তাঁকে ৬ মাস ব্রাজিলে রাখা হয়। সেখানে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। হোশিয়ারপুরের হরবিন্দর সিং ১৫ ঘণ্টার নৌকা যাত্রা, ৪৫ কিমি পায়ে হাঁটা এবং মৃত্যুর দোরগোড়া থেকে বেঁচে ফেরার বর্ণনা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

‘ডাঙ্কি’ রুট কী?

'ডাঙ্কি' শব্দটি, পঞ্জাবি বাগধারা থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ 'এক স্থান থেকে অন্য স্থানে হেঁটে হেঁটে ঘেরা', একটি অবৈধ অভিবাসন কৌশলকে বোঝায় যা 'ডাঙ্কি ফ্লাইট' নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিতে একাধিক দেশে গোপনে থাকার মাধ্যমে সীমান্ত অতিক্রম করার বিষয়টি জড়িত। এর জন্য এজেন্ট থাকে। তারা অনেক টাকা নেয়। এই এজেন্টরা জাহাজের কন্টেইনার বা গাড়িতে গোপন বগির মাধ্যমে পাচার করা থেকে শুরু করে জাল নথি সরবরাহ, সবকিছুই করে দেয় টাকার বিনিময়ে। হরবিন্দর জানিয়েছেন যে ভারত থেকে আমেরিকা যেতে তিনি প্রথমে যান কাতার, তারপর  ব্রাজিল, তারপর পেরু, তারপর কলম্বিয়া, তারপর পানামা, তারপর নিকারাগুয়া এবং তারপর মেক্সিকো৷ এর পর তিনি মেক্সিকো থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আমেরিকায় পৌঁছন। হরবিন্দর সিং বলেন, 'আমরা পাহাড় পেরিয়ে এসেছি। একটি নৌকা, যেটি আমাদের নিয়ে যাচ্ছিল সেটি সমুদ্রে ডুবে যেতে বসেছিল, কিন্তু আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম। আমি পানামার জঙ্গলে একজনকে মরে যেতে এবং একজনকে সমুদ্রে ডুবতে দেখেছি।'

Advertisement

অন্য একজন জানান যে তাঁদের প্রথমে ইতালি এবং তারপরে লাতিন আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁদের ১৫ ঘণ্টা নৌকায় যাত্রা করতে হয়েছিল এবং ৪- থেকে ৪৫ কিলোমিটার হাঁটতে হয়েছিল। তিনি বলেন, 'আমরা ১৭-১৮টি পাহাড় অতিক্রম করেছি। কেউ পিছলে গেলে বাঁচার কোনও সুযোগ ছিল না। আমরা অনেক কিছু দেখেছি। কেউ আহত হলে তাঁকে মরার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। আমরা মৃতদেহ দেখেছি।'

কী কী করতে হয়?

প্রক্রিয়াটি সাধারণত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সেই সমস্ত দেশগুলির টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার মাধ্যমে শুরু হয়, যে দেশগুলির মধ্য়ে কোনও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বা ইউনিফায়েড ভিসা পলিসি নেই। এরকম ২৬টি দেশ রয়েছে। যে সমস্ত দেশগুলির নাগরিকরা একে অন্যের দেশে অবাধে চলাচল করতে পারেন। একবার ইউরোপে গেলে লুকিয়ে ব্রিটেন বা আমেরিকা যাওয়া সুবিধা হয়। যদিও ডাঙ্কি পদ্ধতিটি যে কোনও দেশে বেআইনি প্রবেশের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ব্রিটেনে যাওয়ার জন্য ভারতীয়রা সবচেয়ে পছন্দ করে।

ডাঁকি রুটের ঝুঁকি?

স্বাধীনতার পরে অনেক ভারতীয় পরিবার উন্নত দেশগুলিতে চলে যান ভাল সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে থাকতে। তাদের অবস্থা দেখে অন্যরাও একই পথ নিতে শুরু করে। এই প্রবণতা বছরের পর বছর ধরে বেড়েছে। তাই দিনে দিনে বৈধ এবং অবৈধ, উভয় অভিবাসন বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটি উন্নত জীবনের মোহ অনেককে এই ঝুঁকি নিতে চালিত করে। অনেক আয়, বৃহত্তর সুযোগ, ভাল জীবনযাত্রা, এই 'আমেরিকান ড্রিম'-এর ধারণায় অনেকেই বুঁদ। তাই অনেকেই বিপদ জেনেও ঝুঁকি নেন। অনেকে প্রতারিত হয়ে সর্বশান্ত হন। কারণ বহু এজেন্ট টাকা নিয়ে কাজ করেন না। কেউ কেউ পৈতৃক জমি বা অন্যান্য সম্পদ বিক্রি করেন এজেন্টদের টাকা দেওয়ার জন্য। এজেন্টরা প্রায়ই পাসপোর্ট আটকে রাখে বা অতিরিক্ত টাকা দাবি করে, যার ফলে অনেকেই সমস্যায় পড়ে যান।

ডাঙ্কি রুট সম্পর্কে বিশদ বিবরণ ছিল রাজ কুমার হিরানির 'ডাঙ্কি' সিনেমায়। যেখানে শাহরুখ খান, তাপসী পান্নু, ভিকি কৌশল এবং বোমান ইরানি অভিনয় করেছেন। 'ডাঙ্কি রুট' বিপদে ভরা। অভিবাসীরা কারাবাস এবং নির্বাসনের ঝুঁকির সম্মুখীন হন। যেমনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে। যাত্রাপথ নিজেই বিপজ্জনক। একের পর এক উঁচু-নীচু উপত্যকা, পাহাড়, নদী, বন আর বিশাল সমুদ্র। এসব তো আছেই। এছাড়াও অনেকে শোষণের শিকার হয়। এন্টরা অর্থ আদায় করে মাঝরাস্তায় ছেড়ে দেয়। যদিও অভিবাসী চোরাচালান মানব পাচারের থেকে আলাদা, তবে দুটি অপরাধেই জড়িতদের জীবনকে আরও বিপন্ন করে তোলে।

Read more!
Advertisement
Advertisement