কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক চলছে লোকসভায়। আজ অর্থাত্ মঙ্গলবার মণিপুর ইস্যুতে অনাস্থা প্রস্তাবে ভাষণে পশ্চিমবঙ্গকেও টানলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সৌগত রায়। মোদী সরকারকে আক্রমণ করে বললেন, '২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গকে সরকারি প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে বিজেপি। বর্তমানে ৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বকেয়া।'
এদিন সৌগত রায় বলেন, 'আমি এখানে গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে বিবিসি-র তথ্যচিত্র ব্যানের বিষয়ে বলতে আসিনি। আমি এসেছি মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে। এই কেন্দ্রীয় সরকার নির্দয়। ওরা বাংলায় প্রতিনিধি দল পাঠায়। অথচ মণিপুরে কাউকে পাঠায় না। যাঁরা আসলে ভারতকে ভালবাসে, তাঁরা আসলে মোদীকে ঘৃণা করে। একটু আগে বিজেপি সাংসদ নিশীকান্ত দুবের ভাষণে মণিপুর নিয়ে কিছুই পাওয়া গেল না।'
এরপরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে সৌগত বলেন, 'মণিপুরের সংখ্যালঘুদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ১৪৩ জন নিহত হয়েছে। ৬৫ হাজার মানুষ রাজ্য ছেড়ে পালিয়েছে। মণিপুরের রাস্তায় দুই মহিলাকে ছিনতাই, গণধর্ষণ এবং নগ্ন করে প্যারেড করা হয়েছিল... মুখ্যমন্ত্রী অসহায়। প্রধানমন্ত্রী সংসদে আসছেন না এবং তিনি রাজ্যেও যাননি। যেখানে, I.N.D.I.A. দলগুলো সেখানে গিয়ে বুঝতে পারল কী হয়েছে। মণিপুর জ্বলছে, অথচ প্রধানমন্ত্রী বিদেশে ঘুরছেন, টোমেটোর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। কর্মসংস্থানে ব্যর্থ সরকার। সংসদে কোনও প্রশ্নের জবাব দেন না তিনি। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ তিনি।'
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং সিবিআই নিয়ে আবার সরব হল তৃণমূল। লোকসভায় মঙ্গলবার সৌগত বলেন, 'বিরোধীদের টার্গেট করে ইডি, সিবিআই ব্যবহার করছে বিজেপি।' বিজেপির ‘ওয়াশিং মেশিন’ নিয়েও খোঁচা দিয়েছেন সৌগত। মহারাষ্ট্রে বিজেপি সরকারের সঙ্গে এনসিপি নেতা অজিত পওয়ারের হাত মেলানোর প্রসঙ্গ তোলেন তিনি।
এদিন বিতর্ক শুরু আগেই অবশ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেন, এই ইস্যুতে তিনি শেষ বলে ছক্কা হাঁকাবেন। কারণ, অঙ্ক বলছে বিতর্ক হলেও সরকার পড়ে যাওয়া কার্যত সম্ভব নয়। লোকসভায় মণিপুর নিয়ে বিতর্ক শুরুর আগেই অবশ্য রাজসভায় সাসপেন্ড করা হয় তৃণমূলের ডেরেক ও ব্রায়েনকে। বাদল অধিবেশনের পুরোটাই সাসপেন্ড থাকবেন তিনি।