ইউটিউবার রণবীর এলাহাবাদিয়া ভারতের গট ল্যাটেন্টে বাবা-মাকে নিয়ে অশোভন রসিকতা করার পর থেকে সমস্যায় পড়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজ্যে মামলা রয়েছে। সেগুলো বাতিল করার জন্য ইউটিউবার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। মঙ্গলবার আদালতে শুনানি হয়। প্রবল তিরস্কারের পর তিনি গ্রেফতার থেকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পেয়েছেন।
এদিকে আদালতের রায়ে ওঠা প্রশ্নগুলি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সমাজে অশ্লীলতার সংজ্ঞা কী এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য ও আচরণের সীমারেখা কোথায়? এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে এমন কিছু মন্তব্য, যা সামাজিক শালীনতা ও নৈতিকতার পরিপন্থী বলে মনে করা হচ্ছে।
অশ্লীলতার সংজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন
এক পক্ষের যুক্তি, “যদি বলা হয় এটি এই দেশে অশ্লীলতা নয়, তাহলে অশ্লীলতার মানদণ্ড কী?” অর্থাৎ, কোনও কাজকে শালীনতা বা অশ্লীলতার নিরিখে বিচার করা হলে তার একটি সুস্পষ্ট সংজ্ঞা থাকা প্রয়োজন। অন্যদিকে, এর বিরোধী মত অনুসারে, “আপনি কি যেকোনও জায়গায় আপনার বিকৃত মন প্রদর্শন করতে পারেন?” – অর্থাৎ, সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কিছু নীতি-নৈতিকতা মেনে চলা জরুরি।
আইন ও ব্যক্তিস্বাধীনতা
আইনজীবীরা আদালতে যুক্তি দিয়েছেন যে, আদালতের রায়ে কোনও ব্যক্তি কিছু করার ‘লাইসেন্স’ পান না, বরং আইনগত সীমার মধ্যেই থাকতে হয়। এর পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে, “দায়িত্বের অভাবের উচ্চতা কোথায়?” – অর্থাৎ, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আর সামাজিক দায়িত্ববোধের মধ্যে ভারসাম্য কীভাবে রাখা উচিত?
সমাজ ও শালীনতার প্রশ্ন
কিছু বিশ্লেষকের মতে, “এমন নিন্দনীয় আচরণ যেখানে তিনি মনে করেন যে তিনি যা খুশি করতে পারেন এবং সমাজ তা মেনে নেবে”—এই মানসিকতা সমাজের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এ ধরনের আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, “এই পৃথিবীতে এমন কারা আছেন যারা এটি পছন্দ করবেন?” – যা সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি এক বড় প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে।
পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়
আলোচনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল পারিবারিক ও সামাজিক অবক্ষয়। কেউ কেউ যুক্তি দিয়েছেন, “আপনি সবার বাবা-মাকে অপমান করছেন” – অর্থাৎ, অসদাচরণ বা দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য কেবল একজন ব্যক্তির জন্য নয়, বরং পুরো সমাজের জন্য লজ্জার কারণ হতে পারে। এর সঙ্গে আরও একটি প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, “আপনার ব্যবহৃত ভাষা যদি ভালো হয়, অন্তত কেউ লজ্জিত বোধ করবে না।” অর্থাৎ, বাকস্বাধীনতার সীমানা এমন হওয়া উচিত যাতে তা অন্যদের জন্য অবমাননাকর না হয়।
আদালতে বিতর্কিত ভাষার ব্যবহার
এ নিয়ে আদালতের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, “কেন আদালত এমন ব্যক্তির কথা শোনার প্রয়োজন মনে করবে?” এটি আদালতের সিদ্ধান্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
সমাজের অবস্থান ও নৈতিক মূল্যবোধ
এই বিতর্কে সমাজের মনোভাব ও নৈতিকতার দিকও গুরুত্ব পাচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছেন, “বিকৃত মন আপনি ও আপনার অনুসারীরা প্রদর্শন করেছেন” – অর্থাৎ, এই ধরনের মন্তব্য বা আচরণ সামাজিক কাঠামোতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।