জ্যোতি মালহোত্রাকে নেট দুনিয়া এতদিন ট্রাভেল ব্লগার হিসেবই চিনত। 'ট্র্যাভেল উইথ জো' নামে ইউটিউবে একটি চ্যানেল রয়েছে তার। একাধিক বার পাকিস্তানও ভ্রমণ করেছে সে। সেখানকার রাস্তাঘাট, খাবার, পর্যটনস্থলের ছবি-ভিডিও পোস্ট করে ফলোয়ারের সংখ্যাও বাড়িয়ে নিয়েছে। কিন্তু ব্লগিংয়ের আড়ালে তার 'অসৎ উদ্দেশ্য' ধরা পড়তেই হাতে হাতকড়া পড়েছে জ্যোতির। তবে নিজের জালেই নিজে ফেঁসে গিয়েছে সে। নিজেরই পোস্ট করা একটি ভিডিওতে মিলেছে তার চরবৃত্তির প্রমাণ।
পাক গুপ্তচর সংস্থা ISI-কে তথ্য পাচার ও পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে। কীভাবে জানা গেল তার কুকীর্তির কথা? আসলে গত বছর নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনে ইফতার ডিনারে অংশ নিয়েছিল জ্যোতি। সেই নিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিল। ভিডিওতে তাকে পাকিস্তান হাই কমিশনের একজন কর্মকর্তা, এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের সঙ্গে দেখা গিয়েছে। এই পাক অফিসারকে গুপ্তচরবৃত্তি এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর গতিবিধি সম্পর্কে সংবেদনশীল তথ্য ফাঁস করার জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছেড়ে যেতে বলা হয়েছিল। জ্যোতি রহিমের স্ত্রীর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখত বলে জানা গিয়েছে। অনুমান, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সীমান্তের ওপারে পাঠাতে রহিম ছিল তার মাধ্যম।
২০২৪ সালের ৩০ মার্চ পোস্ট করা ভিডিওটিতে জ্যোতি হাইকমিশনের ইফতার পার্টির বর্ণনা দিয়েছে। রহিমের সঙ্গে জ্যোতিকে ওই ভিডিওতে যেভাবে কথা বলতে দেখা গিয়েছে, তাতেই তাদের পূর্ব পরিচিতি স্পষ্ট হয়। লাইভ ভিডিওতেই পাকিস্তানের ভিসা চাইতে দেখা যায় এই ব্লগারকে।
জ্যোতির বিরুদ্ধে একাধিক তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একাধিকবার পাকিস্তান গিয়ে সেখানে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে ভারতীয় সেনা ও সামরিক গুপ্ত তথ্য পাচার করেছে এই ইউটিউবার বলে অভিযোগ। জ্যোতির ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, তিনি মাস দুয়েক আগে, অর্থাৎ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার আগে পাকিস্তান গিয়েছিলেন। অটারি-ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে যাওয়া, লাহোরের আনারকলি বাজার, পাক পঞ্জাবের কটাস রাজ মন্দির ঘুরে দেখার ভিডিও রয়েছে। পাকিস্তানের খাবার এবং ভারত-পাকিস্তানের সংস্কৃতির তুলনা করেও ভিডিও বানিয়েছিলেন এই ইউটিউবার।