
সিঙ্গাপুরে জুবিন গর্গের মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা ছিল না। ষড়যন্ত্র করে তাঁকে খুন করা হয়েছিল। এই মর্মেই রিপোর্ট পেশ করল বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)। রিপোর্টের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি জানান,'জুবিনের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত ৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যার ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে'।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন,'৮ ডিসেম্বরের মধ্যে এই তদন্তের চার্জশিট দাখিল করা হবে। অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দিয়েছে এসআইটি। তবে আপাতত ওই রিপোর্টকে প্রকাশ্যে আনা হবে না। যাতে কোনও ধরনের বিভ্রান্তি বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়'।
১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে জুবিনের মৃত্যুর পর প্রশ্ন উঠেছিল, কীভাবে মারা গিয়েছেন গায়ক? ডুবে মৃত্যু না বিষ দেওয়া হয়েছিল? জুবিনের দু'বার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। একবার সিঙ্গাপুরে, দ্বিতীয়টি গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে। দু'টি রিপোর্টই এখন অসম পুলিশের সিআইডি এবং তাঁর স্ত্রী গরিমা সাইকিয়া গর্গের কাছে রয়েছে। গত শনিবার সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোরামি দাস জুবিন গর্গের বাড়িতে দু'টি রিপোর্ট নিয়ে যান। রিপোর্টগুলি দেখার পর পুলিশের কাছে তা ফেরত দিয়েছেন গরিমা।
এখন প্রশ্ন উঠছে: ওই রিপোর্টে কী আছে যা গোপন রাখা হচ্ছে? এতে কী এমন তথ্য রয়েছে যা পুরো তদন্তের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে? ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে ইয়টে জুবিনের সঙ্গে ব্যান্ডমেট শেখর জ্যোতি গোস্বামী ছিলেন। তিনি সিআইডির কাছে দাবি করেছিলেন, জুবিনের মৃত্যু ডুবে যাওয়ার কারণে নয় বরং বিষক্রিয়ায় হয়েছিল। ইয়টটি সমুদ্রে পৌঁছনোর পর জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। ইয়টটি বিপজ্জনকভাবে দুলতে শুরু করে। কিন্তু সিদ্ধার্থ কাউকে চালাতে দিতে চাননি। অসম অ্যাসোসিয়েশন সিঙ্গাপুরের তন্ময় ফুকন পানীয় পরিবেশনের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু তন্ময়কে থামিয়ে নিজেই সবাইকে পানীয় দেন সিদ্ধার্থ।
শেখর দাবি করেন, জুবিন জলের নামার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। একটি টিউবকে ধরার চেষ্টাও করেছিলেন। টিউবের কাছে পৌঁছাতে না পেরে মুখ থুবড়ে জলে পড়ে যান। অন্যরা তাঁকে উদ্ধার করতে ছুটে গেলেও সিদ্ধার্থ শর্মা চিৎকার করে বলেন,'জাবো দে, জাবো দে'। যার বাংলা অর্থ 'ছেড়ে দাও'। শেখরের অভিযোগ, জুবিনকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিষ দেওয়া হয়েছিল। খুনের উদ্দেশ্যেই তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।